ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের ১৩ ইন্টার্ন চিকিৎসককে আজীবন হোস্টেলে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে ইন্টার্নশিপ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হাসপাতালের পরিচালক ও ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
ওই নোটিশে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান গ্রহণ, আন্দোলন বানচালের উদ্দেশ্যে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের হুমকি প্রদান, ভয়ভীতি প্রদর্শন, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের অপরাজনীতিতে সক্রিয় অংশ গ্রহণ, সাধারণ শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, ক্যাম্পাস ও তৎসংলগ্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, হোস্টেলে মাদক বাণিজ্য ও মাদক সেবনসহ ইত্যাদি অপরাধে হাসপাতালের ডিসিপ্লিনারি কমিটির এক জরুরি সভা শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস স্বাক্ষরিত এক আদেশে অভিযুক্ত এই ১৩ ইন্টার্ন চিকিৎসকের প্রশিক্ষণ স্থগিত করে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে এবং সশরীরে হাজির হয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়।
এর মধ্যে অভিযুক্ত ১৩ জনকে আজীবনের জন্য হোস্টেলে নিষিদ্ধ করাসহ ডা. প্রতীক বিশ্বাস, আবু সালেহ মো. লতিফুল কবির কৌশিক, সুনীতি কুমার দাস এবং ফায়াদুর রহমান আকাশকে দুই বছরের জন্য, শামীম রেজা, নাইমুর রশীদ, মেহেদী হাসান রোমান, আবু তাহের বিপ্লব রুবেল, কামরুল হাসান ও আবু রায়হানকে এক বছরের জন্য এবং সাখাওয়াত হোসেন সিফাত নামের একজনকে ছয় মাসের জন্য ইন্টার্নশিপ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তবে ডা. অর্নব কুন্ড এবং কাশফি তাবরিজকে হোস্টেলে আজীবন নিষিদ্ধ করা হলেও তাদের ইর্ন্টানশিপের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম।
শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, যারা অভিযুক্ত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তারা সবাই মমেক কলেজ ছাত্রলীগের সক্রিয় নেতাকর্মী। তাদের বিরুদ্ধে মাদক সম্পৃক্ত, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ নানা অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ১১ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সংশ্লিষ্ট একদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল করে হাসপাতালের পরিচালক বরাবর আবেদন জানান। এ নিয়ে অভিযুক্তসহ ছাত্রলীগ সমর্থিত অপর একটি গ্রুপের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে তাৎক্ষণিক ঘটনার খবর পেয়ে সেনা সদস্য, র্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।