• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩০, ১৪ রজব ১৪৪৬

কাজে আসছে না কোটি টাকার স্লুইস গেট


ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২৫, ০৯:৩৮ পিএম
কাজে আসছে না কোটি টাকার স্লুইস গেট

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার নহনা খালে ২ কোটি ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা স্লুইস গেটটি কোনো কাজে আসছে ন। কৃষকদের উপকারের জন্য নির্মাণ করা হলেও এটিই যেন এখন গলার কাঁটা। দীর্ঘদিন ধরে অচলভাবে পড়ে থাকায় সেটি পরিণত হয়েছে মাদকসেবীদের আড্ডাখানায়।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর সূত্রে জানা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে উপজেলার বড়বাড়ি ইউনিয়নের জাউনিয়া গ্রামে স্লুইস গেটটি নির্মাণ করা হয়। খরা মৌসুমে আবাদি জমিতে কৃষককে সেচ সুবিধা দিতে নির্মাণ করা হয় গেটটি। শুরুতে সেটি খোলা ও বন্ধের কাজ হলেও প্রায় পাঁচ বছর ধরে কৃষকের কাজে আসছে না গেটটি। কোনো ধরনের সেচ সুবিধা পাচ্ছেন না কৃষকেরা। নিথর হয়ে দাড়িয়ে রয়েছে গেটটি। যার কারণে অপরদিকে প্রবাহিত হচ্ছে নদীর পানির স্রোত।  

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না হওয়ায় গেইটটি থেকে চুরি হয়ে গেছে লোহার অধিকাংশ মালামাল। ফসলি জমির মাঝে হওয়ায় গেটি ঘিরে নিয়মিত আসর জমে মাদকসেবীদের। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে কৃষিসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকেরা। এতে করে আবাদে যোগ হচ্ছে বাড়তি খরচ সঙ্গে নষ্ট হচ্ছে সরকারি সম্পদ। কৃষকদের উপকারে গেইটটি সংস্কার ও মেরামতের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় কৃষক রবিউল বলেন, “আমাদের উপকারের জন্য এটি করা হয়েছে। শুরুতে আমরা উপকার ভোগ করেছি। সরকার কোটি টাকা খরচ করে খরা মৌসুমে সেচের জন্য করেছেন। অথচ এটি এখন কৃষকের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি সংস্কার করা জরুরি, এতে আমরা উপকৃত হবো।”

স্থানীয় যুবক তানভিরুল বলেন, “সন্ধ্যা নামলে এখানে বখাটে ছেলেদের আসর জমে। সব মাদকসেবিদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। গেটের যে মালামালগুলো রয়েছে সেগুলোও তারা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এসব নিয়ে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত।”

ছোট সিংগিয়া পানি ব্যবস্থপনা সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, “আমাদের সমিতির ব্যবস্থপনায় একটি গেইট ও আরেকটি ওয়ার করা হয়েছে। শুরুতে আমাদের কৃষকদের জন্য এটি উপকার হলেও এখন কোনো কাজে আসছে না। প্রায় দুই বছর ধরে আমরা এলজিইডি এর সঙ্গে এটি সংস্কার নিয়ে কথা বলছি। পুনরায় মেরামত হলে আমাদের কৃষকদের কাজে আসবে এটি।”

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বালীয়াডাঙ্গী উপজেলার প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম বলেন, “স্লুইস গেটটি এখন কৃষকদের জন্য সেচ সুবিধায় আসছে না। গত বছর আমরা এটির স্টিমেট পাঠিয়েছি। এ অর্থ বছরেও প্রাক্কলন পাঠানো হয়েছে। বছরের মাঝামাঝি সময়ে মেরামত হবে বলে আশা করছি।”

ঠাকুরগাঁও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন বিশ্বাস বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা কৃষকদের সেচ সুবিধা পেতে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনরায় সংস্কারের কাজ শুরু করব।”

Link copied!