• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন

কাউন্সিলর পদে ব্যবসায়ী ও ঠিকাদারদের আধিপত্য


খুলনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ৩০, ২০২৩, ০৩:৩৩ পিএম
কাউন্সিলর পদে ব্যবসায়ী ও ঠিকাদারদের আধিপত্য

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে প্রার্থী হতে ব্যবসায়ী ও ঠিকাদারদের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি। এবারের নির্বাচনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রার্থীর আয়ের উৎস ব্যবসা ও ঠিকাদারি। প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, কেসিসি নির্বাচনে সাধারণ ও সংরক্ষিত মোট ৪১টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৭৫ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ৮৬ জন ব্যবসায়ী ও ৩৩ জন ঠিকাদার।

এ ছাড়া এবারের নির্বাচনে বেকারসহ নানা পেশার মানুষ অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, আইনজীবী, চাকরিজীবী ও শ্রমিকও রয়েছেন।

হলফনামায় দেখা গেছে, ব্যবসা ও ঠিকাদারির বাইরে ১৬ জন গৃহিণী নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। এর বাইরে ৬ জন আইনজীবী, ৫ জন চাকরিজীবী, ৫ জন শিক্ষক, ২ জন সাংবাদিক, ২ জন শ্রমিক ও একজন চিকিৎসক। এ ছাড়া কৃষি ও মৎস্য চাষকে পেশা দেখিয়েছেন ১০ জন। পেশার ঘরে ‘প্রযোজ্য নয়’ উল্লেখ করেছেন ৫ জন।

হলফনামায় নিজেকে শ্রমিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. নাসির ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দেলোয়ার হোসেন মাতব্বর। দন্ত চিকিৎসাকে পেশা দেখিয়েছেন ১০ নম্বর ওয়ার্ডের এ এম এম সায়েম মিয়া।

২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী গোলাম মাওলা শানু হলফনামায় পেশার ঘরে লিখেছেন ‘পরামর্শক’। সমাজসেবাকে পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন সংরক্ষিত ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মাহমুদা বেগম।

এ ছাড়া কার্তিককুল সালেহা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুস সালাম এবং দৌলতপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী এবারও প্রার্থী হয়েছেন। তারা দুজন যথাক্রমে নগরীর ৩ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তাদের দেখে নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে এজাজ শেখ নামের একজন প্রাইভেট শিক্ষক এবং সংরক্ষিত ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ঝুমুর শেখ নামের আরেক কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

নিজেকে মৎস্য চাষি উল্লেখ করেছেন ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী হাফিজুর রহমান হাফিজ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আলী আকবর টিপু। সংরক্ষিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর প্রার্থী মাজেদা খাতুন আয়ের উৎসের ঘরে লিখেছেন ‘দর্জি’। একই তথ্য দিয়েছেন সংরক্ষিত ১০ নম্বর ওয়ার্ডের আঞ্জুয়ারা বেগম।

এবারের নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে দু’জন সাংবাদিক অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডে দৈনিক পূর্বাঞ্চলের সিনিয়র ফটো সাংবাদিক আনোয়ারুল ইসলাম কাজল এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দৈনিক সময়ের খবরের সিনিয়র ফটো সাংবাদিক রবিউল গাজী উজ্জল।

ব্যবসায়ী প্রার্থীদের বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. কুদরত ই খুদা বলেন, “বিভিন্ন সময় আয়কর নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায় জ্ঞাত আয় হির্ভূত সম্পদের মালিকরাই নিজেদের ব্যবসায়ী, কৃষি ও মৎস চাষি হিসেবে পরিচয় দেন। ফলে নির্বাচিত হওয়ার পরে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আসে। এ জন্য হলফনামায় আয়ের উৎস হিসেবে ব্যবসা লিখলেও কী ধরনের ব্যবসা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোথায় তা বিস্তারিত উল্লেখ করা উচিত। তাহলে ভোটারদের সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে।”

তিনি আরও বলেন, “বিপুল অর্থ ব্যয়ের অপসংস্কৃতি তৈরি হওয়ায় শিক্ষকসহ সৃজনশীল মানুষ নির্বাচনে আসতে চান না। যার কারণে জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে মানুষ কাঙ্খিত সেবা পান না। সৃজনশীল পেশার মানুষদের নির্বাচনে আসতে উৎসাহিত করা উচিত।”

Link copied!