নোয়াখালী পৌরসভার লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার ফকির চাড়ু মিজি শাহ্ (রহ.) মাজার (দরগাহ বাড়ির মাজার) ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোরে ১৮-২০ জনের একদল দুর্বৃত্ত এ ভাঙচুর চালায়।
স্থানীয়রা জানান, লক্ষ্মীনারায়ণপুর দরগাহ বাড়িতে প্রায় ২৫০ বছর আগে চাড়ু মিজি শাহ্ নামের এক সাধুকে দাফন করা হয়েছিল। পরে তার দাফনস্থান ঘিরে মাজার তৈরি করেন ভক্তরা। প্রতিবছর সেখানে মাসব্যাপী ওরস ও মেলার আয়োজন করা হতো। যদিও সেখানে বছরের বাকি সময়জুড়ে বড় পরিসরে কোনো কার্যক্রম চালানো হতো না।
মাজার কমিটির সভাপতি ও নোয়াখালী পৌর বিএনপির সভাপতি আবু নাছের জানান, ভোরে মাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলামের ছেলে মো. বিজয়ের নেতৃত্বে ১৮-২০ জনের একদল দুর্বৃত্ত মাজারে হামলা চালিয়ে কবরস্থান ও দেয়াল গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
আবু নাছের বলেন, “আমাদের মাজারে বছরে একবার দেশীয় পণ্যের মেলা হয়। এখানে কোনো অসামাজিক কার্যকলাপ হয় না। আমরা তিলে তিলে মাজারের নামে প্রায় এক একরের মতো জায়গা কিনেছি। মাজারটি পুনরায় সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
এদিকে মাজার ভাঙচুরের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিয়ে এ ঘটনায় ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন অনেকে।
শাহাদাত মিলন নামের এক যুবক তার ওয়ালে লেখেন, “আমাদের এলাকার ঐতিহ্যবাহী প্রায় ২০০ বছরেরও পুরোনো রাজা রায়বাহাদুরের আমলের মাজার ফকির চাড়ু মিজি শাহ্ (রহ.) দরগাহটি গতকাল ভোরে ভেঙে দিয়েছে হারামজাদাগুলো। এই মাজার নোয়াখালীর ইতিহাস ঐতিহ্যের একটি গুরত্বপূর্ণ অংশ। এই ফকিরের নামের উপরেই আমাদের এলাকার বড় বাড়িগুলোর একটি দরগাহ বাড়ি। যে বাড়িতে প্রায় ৫০০ মানুষের বসবাস। আশা করছি, দরগাহ বাড়ির মানুষ এবং এলাকাবাসী তাদের ঐতিহ্য রক্ষায় সক্রিয় হবেন। উল্লেখ রাজা রায় বাহাদুর সাহেব ফকির চাড়ু মিজি শাহ্র ভক্ত ছিলেন এবং এই মাজার প্রাঙ্গণকে কেন্দ্র করে বাংলা মাঘ মাসের ১ তারিখ থেকে সপ্তাহব্যাপী এখানে দরগাহ মেলা নামে ঐতিহাসিক একটা মেলা হয়।”
মাজারটি ভাঙচুরের সাথে বিজয় নামে এক যুবকের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিজয়ের মোবাইল ফোনে কল করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে সুধারাম মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাবজেল আহমেদ বলেন, “মাজার ভাঙচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”