• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিলাবৃষ্টিতে পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি, দিশেহারা কৃষক


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২৪, ০৮:৪০ পিএম
শিলাবৃষ্টিতে পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি, দিশেহারা কৃষক
শিলাবৃষ্টিতে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ছবি : প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে শিলাবৃষ্টিতে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) রাত প্রায় ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত উপজেলা দরিচন্দবাড়ী, কেন্দুয়া, মুসুদ্দি, পাইস্কা, নল্যা, ভলিভদ্র, প্যারিআটা, ভাইঘাটসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় টানা প্রায় দেড় ঘণ্টার ওপরে অতি ভারী শিলাবৃষ্টি হয়। আমন ধান ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি নষ্ট হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার দরিচন্দবাড়ী, কেন্দুয়া, ভলিভদ্রসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশিরভাগ জমির ধান আধাপাকা। মঙ্গলবার রাতে অসময়ে হঠাৎ শিলাবৃষ্টির কারণে জমির পাকা ও আধাপাকা ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। ধানের অসংখ্য জমির শীষগুলোতে শিলাবৃষ্টি পড়ে ক্ষতি হয়েছে। এসব দেখে কৃষকরা দিশেহারা হয়েছে পড়েছেন।

উপজেলার দরিচন্দবাড়ী গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, “শিলাবৃষ্টির কারণে আমাদের জমির আধাপাকা ধান মাটিতে নুয়ে পড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এমনিতেই কয়েক বছর ধরে ধান চাষে লোকসান। তারমধ্যে শিলাবৃষ্টি। যা ধান পেতাম তার অর্ধেকও ধানও এবার ঘরে উঠাতে পারব না। অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলাম।”

কেন্দুয়া গ্রামের জাকির মিয়া বলেন, “আমি এক একর জমির ধান লাগাইছিলাম। আমার কিছুই রইল না। ধানে ক্ষেতের যে অবস্থা গরুও খাইব না। শিলে ধান গাছ ছিড়ে গেছে। সব ধান মাটিতে ছিড়া পইড়া আছে। এখন নিজে কীভাবে চলব, আর গরু-বাছুররেই কি বান খাব। ঋণ নিয়া ধান চাষ করছিলাম, এখন তাদের ঋণ কীভাবে দিব। চোখে অন্ধকার দেখছি।”

আরেক কৃষক মঈন উদ্দিন বলেন, “আমি এমন শিলাবৃষ্টি আগে কখনও দেখি নাই। আমার আধা বিঘা জমির সবজি খেতের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শিলাবৃষ্টির ফলে আমার জমির সবজি খেত সবটুকু নষ্ট হয়ে গেছে। সবজি খেতে সাড়ে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। অনেক লসের মধ্যে পড়ে গেলাম। কীভাবে ক্ষতি পূরণ পুষিয়ে বুঝতে পারছি না।”  

ভলিভদ্র গ্রামের সমেজ মিয়া বলেন, “মরিচ লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছর চাষ করি। মঙ্গলবার রাতের শিলাবৃষ্টিতে আমার অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। আমার অনেক ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।”

এ ব্যাপারে ধনবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মাসুদুর রহমান বলেন, “মঙ্গলবার রাতে ব্যাপক শিলাবৃষ্টির কারণে উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে ৪টি ইউনিয়নে বেশি পরিমাণে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে অনেক কৃষকের আধাপাকা ধান ও ফসলের ক্ষতি হয়। এ নিয়ে মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ তালিকা করছে এবং কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন।”

Link copied!