• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি


ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৩, ০৪:২৮ পিএম
ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
ছবি : সংবাদ প্রকাশ

ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে ফেনীতে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বিকেল থেকে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া বয়ে যায়। জেলার বিভিন্ন স্থানে বাতাসের তীব্র চাপে গাছ ভেঙে রাস্তায় পড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। রাতেই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গাছ কেটে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন। এছাড়াও ঝড়ো বাতাসের কারণে ২৮২ হেক্টর জমিতে পাকা ও আধাপাকা আমন ধান নুয়ে পড়েছে। 

এদিকে বিদ্যুতের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ও বিভিন্ন স্থানে লাইনের ওপর গাছ ভেঙে পড়ায় জেলার বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

পল্লী বিদ্যুৎ অফিস জানায়, বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া ও গাছ ভেঙে পড়ে ৫৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৭২টি স্থানে বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে গেছে। জেলার প্রায় ৬০% এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ সচল হয়নি। বিদ্যুৎহীন অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, কৃষি অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দমকা হাওয়ায় জেলায় ৫৫টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনটি ঘরের টিনের চাল উড়ে গেছে।

এবার জেলায় মোট আমন আবাদ হয়েছে ৫৯ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে মিধিলির প্রভাবে দমকা হাওয়ায় পুরো জেলায় দুর্যোগে আক্রান্ত হয়েছে ২৮২ হেক্টর জমির আমন ফসল। শীতকালীন সবজি আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৩৯২ হেক্টর। দুর্যোগের কবলে পড়েছে ২৩ হেক্টর। সরিষা আবাদ হয়েছে ২০ হেক্টর জমিতে। দুর্যোগ কবলিত হয়েছে ২ হেক্টর জমির সরিষা। এছাড়া আধা হেক্টর জমির খেসারিও দুর্যোগের কবলে পড়েছে। ঝড়ের কারণে ধানের তেমন ক্ষতি না হলেও রবিশস্য আবাদ পিছিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

কালিদহ ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু তৈয়ব জানান, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কারণে কে পাহালিয়া অ্যাগ্রো ফার্মে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ফলন্ত জি-৯ কলা গাছ বাতাসে ভেঙে পড়ে  প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। দমকা হাওয়ায় বিভিন্ন প্রজাতির কুলগাছ গাছের ডালপালা ভেঙে পড়েছে। ফলন্ত অনেকগুলো গাছ মাটিতে বিছিয়ে ফেলেছে।

ফেনীস্থ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক একরাম উদ্দিন জানান, দুর্যোগ আক্রান্ত আমন ফসলি জমির মধ্যে ফেনী সদর উপজেলায় ১১০ হেক্টর, ছাগলনাইয়ায় ৭০ হেক্টর, ফুলগাজীতে ১৫ হেক্টর, পরশুরামে ২০ হেক্টর, দাগনভূঞায় ১৭ হেক্টর ও সোনাগাজীতে ৫০ হেক্টর  জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ফেনী সদর উপজেলায় শীতকালীন সবজি ৫ হেক্টর, সরিষা ১ হেক্টর, ছাগলনাইয়া শীতকালীন সবজি ৪ হেক্টর, সরিষা আধা হেক্টর, ফুলগাজীতে শীতকালীন সবজি ২ হেক্টর, সরিষা আধা হেক্টর, পরশুরামে শীতকালীন সবজি ২ হেক্টর, দাগনভূঞায় শীতকালীন সবজি ৫ হেক্টর, সোনাগাজীতে শীতকালীন সবজি ৫ হেক্টর, খেসারি আধা হেক্টর।

ফেনীতে শুক্রবার বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৭ দশমিক ৩৩ মিলিমিটার ও শনিবার (১৮ নভেম্বর) বৃষ্টিপাত হয়েছে ৬১ দশমিক ৩৩ মিলিমিটার।

ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম হাওলাদার মো. ফজলুর রহমান জানান, জেলার প্রায় ৬০ শতাংশ জায়গায় এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ সচল হয়নি। বিদ্যুৎকর্মীরা নিরবচ্ছিন্ন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ৫৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি খুঁটিগ্রস্ত হয়েছে। ১৭২টি স্থানে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেছে।

ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার জানান, মিধিলির প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। ঘর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে টিন দিয়ে সহযোগিতা করবে জেলা প্রশাসন।

Link copied!