নওগাঁয় জেলা প্রশাসনের বেধে দেওয়া সময়সূচি অনুযায়ী বাগান থেকে গুটি জাতের আম সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বুধবার (২২ মে) সকাল থেকে এ কার্যক্রম চালু হয়।
এর আগে ৬ মে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক বৈঠকে বিভিন্ন জাতের আম সংগ্রহের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয় জেলা প্রশাসন। এছাড়া জাতভেদে আম নামানোর জন্য একটি তালিকাও প্রকাশ করা হয়। ওই বৈঠকে আমচাষি, ব্যবসায়ী, কৃষি কর্মকর্তা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গুটি আম সংগ্রহ শুরু হলেও উন্নতজাতের আম বাজারে আসবে আরও কিছুদিন পর। এ বছর জেলা থেকে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার আম বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। একই সঙ্গে এ বছর ১ হাজার টন আম বিদেশে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার আম বাণিজ্য হতে পারে ধারণা করছে স্থানীয় প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ।
জেলা প্রশাসনের বেধে দেওয়া সময় অনুযায়ী আগামী ৩০ মে থেকে গোপালভোগ, ২ জুন থেকে ক্ষিরসাপাত ও হিমসাগর, ৫ জুন থেকে নাক ফজলি, ১০ জুন থেকে ল্যাংড়া ও হাঁড়িভাঙা, ২০ জুন থেকে আম্রপালি, ২৫ জুন থেকে ফজলি এবং আগামী ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা, বারি-৪, বারি-১১, গৌড়মতি ও কাটিমন আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলার ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমির বাগানে আম চাষ হয়েছে। এসব বাগানে ব্যানানা ম্যাংগো, মিয়াজাকি, কাটিমন, গৌড়মতি, বারি আমসহ দেশি-বিদেশি প্রায় ১৬ জাতের আম চাষ করেছেন চাষিরা। নওগাঁ থেকে এ বছর অন্তত ৪ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ টন আম উৎপাদনের আশা করছে কৃষি অফিস।
জাত ভেদে আম বাগানের পরিমাণ নাকফজলি ৮৯৮ হেক্টর, ল্যাংড়া ১ হাজার ৬১৫ হেক্টর, ফজলি ১ হাজার ৪০৮ হেক্টর, গোপালভোগ ৬১০ হেক্টর, ক্ষীরশাপাত ১ হাজার ৪৭ হেক্টর, বারি-৪ আম ২ হাজার ৪০২ হেক্টর, বারি-১১ আম ৪২ দশমিক ৫০ হেক্টর, মল্লিকা ৩৭ হেক্টর, কাটিমন ১৫৪ দশমিক ৫০ হেক্টর, গৌড়মতি ১৪৩ দশমিক ২৫ হেক্টর, হাড়িভাঙা ৪১ দশমিক ৭৫ হেক্টর, ব্যানানা ম্যাংগো ১০৭ দশমিক ৫০ হেক্টর, আশ্বিনা ২ হাজার ৩২২ দশমিক ৫০ হেক্টর, কুমড়াজালি ১৩ হেক্টর, গুটি/ স্থানীয় ৬০৭ হেক্টর এবং আম্রপালি ১৮ হাজার ৪২২ হেক্টর। জেলায় যে পরিমাণ আম বাগান রয়েছে তার মধ্যে আম্রপালি ৬০ দশমিক ৮০ শতাংশ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আজকে থেকে স্থানীয় গুটি জাতের আম পাড়া তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেই সময় অনুযায়ী চাষিরা গুটি আম নামাবেন। এছাড়া উন্নত জাতের যেসব আম আছে সেগুলো বাজারে আসতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।
আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, “পরিপক্ব ও ক্ষতিকারক কেমিক্যাল উপাদানমুক্ত আম নিশ্চিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে নির্ধারিত সময়ের আগে যদি কোনো বাগানে আম পেকে যায় তাহলে চাষিরা সেগুলো নামাতে পারবেন। সেক্ষেত্রে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগকে অবশ্যই জানাতে হবে।”