ফেনীতে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি। এরই মধ্যে গ্রামীণ জনপদে ফুটে উঠেছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। পানির স্রোতে ভেঙে গেছে জেলার বিভিন্ন সড়ক। সরে গেছে পাকা সড়কের কনক্রিট ও সলিং। জেলা এলজিইডি জানিয়েছে সড়কের এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৪০ কোটি টাকারও বেশি।
সড়কের এই বেহাল দশার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বন্যায় আক্রান্ত পরিবারগুলোতে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছতে বেগ পেতে হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীসহ সরকারি বেসরকারি সংস্থাকে।
সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অসুস্থ রোগী ও স্বজনদের। যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখতে ভাঙা সড়ক দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
দরবারপুর ইউনিয়নের জগৎপুরে গ্রামের বাসিন্দা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. নজরুল ইসলাম সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “বন্যায় নিজের এলাকার বাড়িঘর ডুবে একাকার দেখে বারবার হতাশায় ভুগছিলাম। শেষমেষ গ্রামে এসে দেখি কিছুই নাই, সব নিয়ে গেল বন্যায়। এমন বন্যা আগে দেখি নাই। টেকসই বেড়িবাঁধ থাকলে এমন ক্ষতি হতো না। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে ক্ষতি অনুযায়ী পুনর্বাসন দরকার। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে কাজ করলে ক্ষতি পোষানো সম্ভব।”
দিদারুল আলম নামের স্থানীয় আরেক বাসিন্দা বলেন, “দেড় কিলোমিটার বেড়িবাঁধে ১৩ জায়গায় ভাঙন। ভাঙনগুলো বড় বড়। এগুলো মেরামত না হলে আবার পানি ঢুকবে। তাই দ্রুত মেরামত করা দরকার।”
ফেনী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ আল ফারুক সংবাদ প্রকাশকে জানান, জেলায় স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় ৪ হাজার ৩০০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে পানিতে ডুবে ছিল ৩ হাজার ৩০০ কিলোমিটার। পানির স্রোতে ৩৪২টি সড়কে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫০০ কিলোমিটার। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে মেরামত ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। স্বল্প মেয়াদি সড়ক ২ মাসের মধ্যে, আর দীর্ঘমেয়াদি সড়কগুলো পৌনে ২ বছরের মধ্যে মেরামত কাজ সম্পন্ন করবে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তাই বরাদ্দের জন্য অর্থের চাহিদাপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
ফেনী সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমাদের আওতাধীন কিছু সড়কে এখনো পানি রয়েছে। চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। সরেজমিনে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত পরিমাণ নিরূপণ করা হবে। তবে এখন প্রাথমিক পর্যায়ে আনুমানিক ৪০ কোটি ৯৮ লাখ ৪৭ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে।”