• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অধিক মুনাফার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নিয়ে উধাও ইনস্যুরেন্স


জয়পুরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২৪, ০৩:৪১ পিএম
অধিক মুনাফার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নিয়ে উধাও ইনস্যুরেন্স

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে স্থানীয় গ্রাহকদের আমানতের টাকা নিয়ে গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কর্মকর্তারা লাপাত্তা হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে আক্কেলপুর উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। তারা আমানতের টাকা ফেরত ও গার্ডিয়ান লাইফ ইনস্যুরেন্স কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি জানান।

ভুক্তভোগী গ্রাহক, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সাল থেকে জয়পুরহাট শহরে গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্সের জেলা শাখার কার্যক্রম শুরু হয়। তখন থেকে কর্মকর্তা ও মাঠকর্মীরা বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে বীমা পলিসি করতে উদ্বুদ্ধ করতেন। এরপর গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আক্কেলপুর পৌর শহরের কলেজ বাজারে একটি ভবনের তৃতীয় তলা ভাড়া নিয়ে গার্ডিয়ান লাইফ ইনস্যুরেন্সের উপজেলা শাখা কার্যালয় খোলা হয়। এখানে আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ও শাখা ব্যবস্থাপক এবং মাঠকর্মীরা বসেন।

গ্রাহকদের অভিযোগ, গ্রামে-গ্রামে গিয়ে ভালো লভ্যাংশের লোভ দিয়ে প্রথমে বীমা পলিসি খোলার জন্য প্রলুব্ধ করা হয়। পলিসি খোলার পর তাদের প্রতি লাখে মাসিক তিন হাজার টাকার মুনাফার লোভ দেখিয়ে এককালীন মোটা অংকের আমানত সংগ্রহ শুরু করেন। আমানতের টাকা যে কোনো সময় গ্রাহকরা তুলে পারবেন বলে জানানো হয়। প্রথম দুই-তিন মাস প্রত্যেক আমানতের বিপরীতে মাসিক মুনাফা দিয়েছে। গত মার্চ থেকে গ্রাহকরা মুনাফা পাচ্ছিলেন না।

ইদ্রীস আলী নামে এক ব্যক্তি ৩২ লাখ টাকা আমানত রাখেন। তিনি তিন-চার মাস লভ্যাংশের টাকা পেয়েছেন। এরপর তাকে লভ্যাংশের টাকা ও আমানতের টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন না। এ ঘটনায় ইদ্রীস আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

ইদ্রীস আলী বলেন, “৩২ লাখ টাকা আমানত রেখেছিলাম। পরে তারা টাকা ফেরত দিচ্ছিল না। ইউএনওর কাছে শরণাপন্ন হয়ে ২৪ লাখ ৯ হাজার টাকা ফেরত পেয়েছি। এখনো পুরো টাকা ফেরত পাইনি।”

আক্কেলপুর পৌর শহরের শান্তা মহল্লার নাজমা আক্তার বলেন, “আমি ১০ লাখ টাকার আমানত রেখেছি। আমাকে প্রতি লাখে তিন হাজার টাকা করে দুই মাস মুনাফা দিয়েছিল। আমানতের টাকা ফেরত দিচ্ছে না।”

গোপীনাথপুর নয়াপাড়া গ্রামের চম্পা আখতার সাথী বলেন, “আমি লোভে পড়ে ৯ লাখ টাকা আমানত রেখেছি। মুনাফা ও আমানতের টাকা ফেরত পাচ্ছি না।”

তিলকপুর গিলাকুড়ি আফরোজা আখতার রানী বলেন, “ব্যাংক ও পোস্ট অফিসের চেয়ে তিনগুণ লভ্যাংশের পাওয়ার আশায় ২৪ লাখ টাকা আমানত রাখি। দুই লাখ টাকা লভ্যাংশ দিয়েছে। চার মাস ধরে লভ্যাংশ ও আমানতের টাকাও ফেরত পাচ্ছি না।”

এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় গার্ডিয়ান লাইফ ইনস্যুরেন্সের শাখা কার্যালয়ে গিয়ে তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে। তবে শাখা ব্যবস্থাপক পরিচয়দানকারী তাজমা খাতুন বলেন, “আমরা আমানত সংগ্রহ করিনি। আমরা বীমা পলিসি খুলেছি। মেয়াদের আগে টাকা দেওয়ার নিয়ম নেই।”

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!