পদ্মা সেতু-শরীয়তপুর চার লেন সংযোগ সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ চলছে ধীর গতিতে। চার বছর পেরিয়ে গেলেও এ পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৫৫ শতাংশ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতুর নাওডোবা প্রান্ত থেকে শরীয়তপুর জেলা শহর পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের জন্য ২০২০ সালের মার্চে ১ হাজার ৬৮২ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। এরপর কয়েক দফায় বেড়েছে প্রকল্পের মেয়াদ। সর্বশেষ ২০২৬ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়ক খুঁড়ে রাখায় ভোগান্তিতে পড়েছেন এ পথে চলাচলকারীরা। লাগছে বাড়তি সময়, বেড়েছে জ্বালানি খরচ, নষ্ট হচ্ছে যানবাহনের যন্ত্রাংশ। এমন পরিস্থিতির জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা, পরিবহন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সড়কে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকবল তেমন নেই। নামমাত্র কয়েকজন শ্রমিক আর যন্ত্রপাতি দিয়ে চলছে ২৭ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নের মতো বড় প্রকল্পের কাজ। বর্তমানে পুরো সড়কজুড়েই ভাঙাচুরা আর খানাখন্দ। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন চলাচলকারীরা। বৃষ্টি হলে ভোগান্তি বাড়ে কয়েকগুণ। চলাচলে যাত্রীদের পড়তে হয় ভোগান্তিতে ও যানজটে ঘটে দুর্ঘটনাও।
পরিবহন ব্যবসায়ীরা বলেন, “পদ্মা সেতু থেকে আমাদের জেলা সবচেয়ে কাছে। কিন্তু দুর্ভোগটা আমাদেরই সবচেয়ে বেশি। দুই ঘণ্টার জায়গায় চার ঘণ্টা লাগে। অসুস্থ যাত্রীদের বেশি সমস্যা হয়। এমন সড়ক দিয়ে চলাচলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যানবাহন। প্রতিনিয়ত পাল্টাতে হচ্ছে গাড়ির যন্ত্রাংশ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবহন খাত। মালামাল পরিবহনেও তৈরি হয়েছে ঝুঁকি।”
এ সড়কে নিয়মিত মালামাল নিয়ে যাতায়াত করেন ব্যবসায়ী ফয়সাল মুন্সি। সংবাদ প্রকাশকে তিনি বলেন, “পদ্মা সেতু তৈরি হওয়ার পর একটু আলোর মুখ দেখেছি। কিন্তু পদ্মা সেতু-শরীয়তপুর সংযোগ সড়ক সংস্কারের কাজ না হওয়ায় আমরা ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমরা চাই দ্রুত এই কাজটি সম্পন্ন হোক।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সালেহ আহমেদের কর্মকর্তা (সিএনএফও) মুহাম্মদ বকুল সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “ভূমি অধিগ্রহণ ও বালু সরবরাহের জটিলতার কারণে আমরা সময়মতো কাজ শেষ করতে পারছি না। তবে এখন বাকি কাজ নির্দিষ্ট সময়ের আগেই শেষ হবে।”
শরীয়তপুর সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “সড়ক নির্মাণকাজে অধিগ্রহণ আর জমি জটিলতায় কাজের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবে মোট কাজের প্রায় ৫৫ শতাংশ এর বেশি শেষ হয়েছে। ২০২৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত সময় নেওয়া আছে। তবে আমরা আশা করছি ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হবে।”