• ঢাকা
  • শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩০, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রয়োজন স্থানীয় সরকার নির্বাচন : নুর


রংপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২৫, ০৫:২৭ পিএম
জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রয়োজন স্থানীয় সরকার নির্বাচন : নুর

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন বেশি প্রয়োজন বলে মনে করেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনি বলেছেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে হওয়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিজয়ী জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ করা হয়েছে। এতে করে স্থানীয় সরকারের কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। জনগণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সরকারের কাজে গতি আনার জন্য জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আহ্বান জানাচ্ছি।”

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুর নগরীর সিটি বাজারে জেলা ও মহানগর কার্যালয়ের উদ্বোধন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

নুরুল হক নুর বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে তা হবে দেশের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও মডেল নির্বাচন। কারণ, রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় যাওয়ার পর স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তাদের আধিপত্য ও প্রভাব থাকে। সংস্কার কমিশনও জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পরমার্শ দিয়েছে। সরকারের প্রতি আহ্বান জানাব, আগামী বছরের জুন-জুলাই মাসে জাতীয় নির্বাচন হলে মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সিদ্ধান্ত যেন তারা নেয়।”

নুর বলেন, “জাতীয় সংসদ ছাড়া সংবিধান সংশোধন করা উচিত হবে না অনেকে বলছে। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বৃহৎ জনসমর্থন রয়েছে। দেশের রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজ এ সরকারকে সমর্থন দিয়েছে। অনেক দেশে অভ্যুত্থানের পর সংবিধান পরিবর্তন হয়েছে। আমরা মনে করি জুলাই ঘোষণাপত্রে সংবিধান সংস্কার স্পষ্ট হবে। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্যকে কোনোভাবে ফাটল বা বিভাজনের রূপ দেওয়া যাবে না। এজন্য সবাইকে বাক্য চয়ন, শব্দ চয়ন ও কার্যক্রমে সতর্ক থাকতে হবে।”

কিছু রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের আচারণ আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের মতো হয়ে উঠেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “পূর্বের সিস্টেম বলবৎ রেখে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য মানুষ জীবন দেয় নাই। রাজনৈতিক দলের দায়িত্ববোধ রয়েছে তারা যেন জনগণের প্রতি সহনশীল থেকে নাগরিকদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। কোনো দলের বাড়াবাড়ি, মারামারি, হানাহানি, দখলদারি, চাঁদাবাজি চললে তারা জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হবে।”

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি আরও বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সংক্ষিপ্ত পরিসরে সংস্কার করে নির্বাচন চাইলে ডিসেম্বরে এবং একটি বিস্তৃত হলে আরও ৬ মাস প্রয়োজন হবে নির্বাচন দিতে। আমি মনে করি, শুধু একটি নির্বাচন বা ভোটের জন্য গণঅভ্যুত্থান হয়নি। রাষ্ট্র পুনর্গঠন, সংস্কার ও মেরামতের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক, মানবিক ও জনআকাঙ্খিত বাংলাদেশ বির্নিমাণের জন্য গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এটির জন্য সংস্কার কমিশন প্রস্তাবনা দিয়েছে। সেই প্রস্তাবনার আলোকে রাজনৈতিক দলের সাথে আলাপ-আলোচনা করে রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে। এরপর অধিকাংশ বাস্তবায়ন হলে সরকার নির্বাচনের পথে হাঁটবে।”

আওয়ামী লীগ সম্পর্কে তিনি বলেন, “যারা ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে, রাজপথে রক্ত ঝরিয়েছে, গুলি করে মেরেছে। স্বাধীন রাষ্ট্রকে বিদেশি রাষ্ট্রের তাবেদারে পরিণত করেছিল তাদের রাজনীতি করার নৈতিক ভিত্তি ও নৈতিক অধিকার নেই। এ দেশে তাদের কবর রচনা হয়েছে। আগামীতে আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারবে না কিংবা জনগণ তাদের রাজনীতি করতে দেবে না।”

এ সময় গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান, উচ্চতর পরিষদের সদস্য হানিফ খান সজীব, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কামাল হোসেন রিপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Link copied!