ফরিদপুরে মীরা আক্তার (৩০) নামের এক গৃহবধূকে হত্যার দায়ে স্বামীসহ দুইজনকে যাবজ্জীবন স্বশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, আরও তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুই ব্যক্তি হলেন- নিহত মীরা আক্তারের স্বামী ফরিদপুর সদরের কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের উজান মল্লিকপুর বাসিন্দা মোস্তফা কামাল এবং তার বন্ধু মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মাঝকান্দি গ্রামের মজিদ মোল্লা।
রায় ঘোষণার সময় মজিদ মোল্লা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে মীরার স্বামী মোস্তফা কামাল পলাতক।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মীরা আক্তার বাসে কামারখালী যাচ্ছিলেন। বাসে তার সঙ্গে পরিচয় হয় জয় মোস্তফা কামালের। সেখান থেকে প্রেম। পরে তারা গোপনে বিয়ে করেন। বিয়ে করলেও মোস্তফা তার স্ত্রীকে বাড়িতে তুলে নেননি। ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর গাড়িতে করে স্বামীর বাড়িতে যাচ্ছিলেন মিরা। খবর পেয়ে মাঝকান্দি এলাকায় বাস থেকে স্বামী মোস্তফা তাকে নামিয়ে নেন। পরে বন্ধু মজিদ মোল্লার সহায়তায় মাঝকান্দি পারিশা ফিলিং স্টেশনের পেছনে একটি পাটক্ষেতে নিয়ে মীরাকে গলা টিপে হত্যা করেন।
পরে ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি ওই জায়গা থেকে অজ্ঞাতনামা লাশ হিসেবে মরদেহটি উদ্ধার করে মধুখালী থানার পুলিশ। এ ঘটনায় মধুখালী থানার এসআই রাকিবুল হক বাদী হয়ে ওই দিনই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।
এ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুখালী থানার এসআই মাহিদুল হক ২০১৮ সালের ৩১ মে নিহত নারীর স্বামী মোস্তফা কামাল ও তার বন্ধু মজিদ মোল্লাকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেন।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালত আদালতের পিপি নওয়াব আলী মৃধা বলেন, এ রায়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আদালত পলাতক আসামি মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি করা হয়েছে।