লক্ষ্মীপুরে সরকারি মালখানায় বছরের পর বছর খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকায় নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা। ভিন্ন অপরাধের ঘটনায় জব্দ এসব গাড়ি সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের।
তবে পুলিশ বলছে, জব্দকৃত এসব গাড়ির বেশিরভাগই চোরাই। সঠিক কাগজপত্র না থাকায় প্রকৃত মালিককে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই কাউকে দেওয়াও যাচ্ছে না এসব গাড়ি।
এছাড়া মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণে জব্দ হওয়া যানবাহনগুলো নিলাম করতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
সরেজমিনে লক্ষ্মীপুর বিআরটিএ অফিস ও পুলিশ লাইন্সে গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার মোটরসাইকেলের স্তুপ। শুধু মোটরসাইকেল নয়, প্রাইভেটকার ও সিএনজিচালিত আটোরিকশাও রয়েছে এখানে। স্তুপে রাখা গাড়িগুলোর মধ্যে বিভিন্ন নামি-দামি ব্যান্ডের গাড়িও রয়েছে। তবে রোদ-বৃষ্টি আর ধুলার আস্তরণে বোঝার উপায় নেই কোনটা সচল আর কোনটা অচল। সরকারি মালখালায় বছরের পর বছর অযত্নে পড়ে থাকায় কিছু গাড়ির কাঠামো ও সেসিস ছাড়া অবশিষ্ট কিছুই নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরে সরকারি মালখানায় বিভিন্ন সময় জব্দ করা মোটরসাইকেলের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজারের বেশি। বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় জব্দ করা যানবাহন সরকারি মালখানায় পাঠায় আইন-শৃঙ্খখলা বাহিনী। পরে আইনি জটিলতার কারণে অনেক মালিকই সেগুলো ছাড়িয়ে নিতে পারছেন না। তাই দিন-দিন এভাবে জমে গাড়ির স্তুপ তৈরি হয়েছে।
এ দিকে রফিক উল্লাহ ও আবদুল হাই নামের দুই ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, বছরের পর বছর এসব জব্দ গাড়ি রোদে-বৃষ্টিতে রেখে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া গাড়ির বেশিরভাগ যন্ত্রাংশ ও ব্যাটারি খুলে নেওয়ারও অভিযোগ করেছেন তারা।
লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আহমদ ফেরদৌস মানিক বলেন, “এভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদ অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। দ্রুত এসব মামলা নিষ্পত্তি করলে আমাদের সম্পদগুলো রক্ষা পাবে। সরকারও কোটি টাকা রাজস্ব পাবে।”
জেলার পুলিশ সুপার আকতার হোসেন বলেন, “এসব গাড়ির বেশিরভাগই চোরাই ও বিভিন্ন মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। মামলাগুলো নিষ্পত্তি না হওয়া ও সঠিক কাগজপত্র না থাকায় গাড়িগুলো মালিকের কাছে ফেরত দেওয়া যাচ্ছে না।”