২০০০ সালে শুরু হয় পঞ্চগড়ের সমতলভূমিতে চা চাষের যাত্রা। বর্তমানে জাতীয় উৎপাদনের প্রায় ১৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ আসে এখানকার সমতলের বাগান থেকে। তবে কাঁচা চাপাতার ন্যায্য দাম না পেয়ে লোকসানের মুখে পড়েছেন চা চাষিরা। তাদের অনেকেই ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ চা-বাগান বন্ধক রেখেছেন। আবার অনেকেই বাগানের চাগাছ তুলে অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকছেন।
এদিকে কৃষকদের অভিযোগ, কারখানাগুলো যোগসাজশ করে ঠকাচ্ছে। অন্যদিকে কারখানামালিকদের দাবি, কৃষকেরা মানসম্মত পাতা সরবরাহ করতে পারছেন না।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের তথ্যমতে, উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলা পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও দিনাজপুরে ৮ হাজার ৪০১টি ছোট-বড় চা-বাগানে মোট ১২ হাজার ১৩২ একর জমিতে চা চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে ক্ষুদ্র চা চাষি অন্তত ১০ হাজার।
চা-চাষিরা জানান, সার-কীটনাশকের দাম বাড়া ও এবারের খরায় বাড়তি সেচের কারণে প্রতি কেজি কাঁচা চা-পাতায় ২০-২২ টাকা উৎপাদন খরচ হচ্ছে। প্রতি কেজি চা-পাতা তুলতে শ্রমিকদের দিতে হয় ৩-৪ টাকা। শুরুর দিকে কেজিপ্রতি চা-পাতার দাম পেতেন ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কিন্তু কারখানামালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে দাম পাচ্ছেন না তারা।
পঞ্চগড় মডেল এলাকায় ১২ জন বন্ধু মিলে শুরু করেছিলেন স্বপ্নের চা-বাগান। কয়েক বছর যেতে না যেতেই তাদের স্বপ্নের চা-বাগান হয়েছে গলার কাঁটা। ১৫ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক ১২ বিঘা জমিতে শুরু করলেও এখন প্রতিবছর জমির চুক্তিভিত্তিক টাকা দিতে পারছেন না। কাঁচা চা-পাতার উৎপাদন খরচ তুলতে না পেরে তারা চাগাছ তুলে ফেলছেন।
তরুণ উদ্যোক্তা আমিনার ইসলাম বলেন, “দিনের পর দিন লোকসানে আর পারা যাচ্ছে না।”
বাংলাদেশ চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকর্তা আমির হোসেন বলেন, গত বছরের তুলনায় উৎপাদন কিছুটা কম হতে পারে। তবে নিলাম বাজারে সর্বনিম্ন দর দেওয়ায় কারখানার মালিক ও চা চাষিরা উপকৃত হবেন।