চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় ফুটেজ দেখে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া চুনতি ফারাঙ্গা এলাকায় আইনজীবী আলিফের কবর জিয়ারত ও পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, “অ্যাডভোকেট সাইফুলের খুনিদের বিচার নিশ্চিত করবে সরকার। এই হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের দ্রুততম সময়ে আইনের আওতায় এনে সর্ব্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। সেটা হোক ব্যক্তি, সংগঠন কিংবা গোষ্ঠী। তদন্ত চলছে, ফুটেজ আছে। ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।”
তিনি বলেন, “গুজব একটা মারাত্বক জিনিস। আমাদের গুজব থেকে দূরে থাকতে হবে। অভ্যন্তরীণ শান্তি, শৃঙ্খলা, সম্প্রীতি বজায় রাখতে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে, সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।”
সরকারকে বিব্রত করতে দেশে-বিদেশে একটি গোষ্ঠী তৎপরতা চালাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি দেশবাসীকে অনুরোধ করব, ঘটনার পর থেকে অদ্যবধি আপনারা যে ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছেন, আগামীতেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে।”
গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার পর প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে। এরপর সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী দলের হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণের মাধ্যমে কাজ শেষ করবে।”
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, অ্যাডভোকেট আলিফ হত্যার বিচার নিশ্চিত করা হবে। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো উসকানিমূলক ঘটনা না ঘটে, সেদিকে সবার সতর্ক থাকতে হবে। প্রতিটি বিপদ মোকাবিলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।”
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম আদালতে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুরের পর তার অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, চট্টগ্রাম আদালতে সংঘর্ষের ঘটনায় হতাহত ৬-৭ জন চমেক হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে সাইফুল ইসলাম নামের এক আইনজীবীকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। তার শরীরে একাধিক কোপের চিহ্ন রয়েছে।