ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় নতুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে দেখা না করায় মডেল মসজিদের খতিব ও মুয়াজ্জিনের বেতন আটকে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি তাদের শাস্তিস্বরূপ টানা এক সপ্তাহ নিয়ম করে প্রতিদিন দেখা করার নির্দেশ দিয়েছেন নতুন ইউএনও রাসনা শারমিন মিথি।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েন মডেল মসজিদের খতিব মাওলানা সালাউদ্দিন ও মুয়াজ্জিন হাফেজ আবুল কালাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম ইকরাম।
ঘটনার সময় উপস্থিত স্থানীয় ব্যবসায়ী হুমায়ুন বলেন, “ইউএনও খতিব ও মুয়াজ্জিনকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘দুই মাস হলো এসেছি, কেন দেখা করেননি। বাবা-মা চেনেন না, খালা খালু চিনলে হবে?’ জবাবে খতিব বলেছেন, ‘আমরা এসেছি কিন্তু অন্য মানুষের ভিড় থাকায় ঢুকতে পারিনি’। এতে আরও উত্তেজিত হয়ে ইউএনও বলেন, ‘দাঁড়িয়ে থাকলেন না কেন, ৪-৫ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকবেন তবুও দেখা না করে যাবেন না। আগামী এক সপ্তাহ নিয়ম করে দেখা করবেন তাহলে বেতন পাবেন।’
প্রত্যক্ষদর্শী হুমায়ুন আরও বলেন, “হুজুরদের বসতেও দেওয়া হয়নি, তারা খুবই লজ্জা পেয়েছেন। এ ধরনের ঘটনায় আমরা উপস্থিত সবাই বিব্রত হয়েছি। একপর্যায়ে স্থানীয় যুবদল নেতা জাহিদুল ইসলাম রাসেল হুজুরদের বেতন ছাড় করার অনুরোধ করেন। কিন্তু কারও কথাই রাখেননি ইউএনও।”
জাহিদুল ইসলাম রাসেল বলেন, “আমি অনুরোধ করেছি কিন্তু ইউএনও সাহেব স্বাক্ষর করেননি। তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন, কারণ তারা দেখা করেননি। আমরা বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করব।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, “স্যারের আচরণে সবাই হতবাক হয়ে যায়, কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করেনি। শেষ পর্যন্ত বেতন শিটে স্বাক্ষর না করেই তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
জানতে চাইলে মডেল মসজিদের খতিব মাওলানা সালাউদ্দিন বলেন, “আমরা দেখা করতে গিয়েছিলাম, কিন্তু ভিড়ের কারণে সুযোগ পাইনি।”
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম ইকরাম বলেন, “স্যারের সঙ্গে দেখা না করায় তিনি একটু রাগ করেছেন। আশা করি আগামী সপ্তাহে তিনি বেতন শিটে স্বাক্ষর দেবেন।“
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করার বাধ্যবাধকতা আছে কি না জানতে চাইলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভোলা জেলা উপ পরিচালক মো. মাকসুদ বলেন, “এমন কোন নিয়ম নেই। আমি খোঁজ নিয়ে ইমামরা যাতে বেতন পায় সেটি নিশ্চিত করব।”.
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউএনও রাসনা শারমিন মিথি। তিনি বলেন, “তাদের অভিযোগ সত্য নয়।”