বিয়ের নামে চীনে পাচার হচ্ছে খাগড়াছড়ি-রাঙামাটির পাহাড়ি তরুণীরা। গড়ে উঠেছে শক্তিশালী পাচার চক্র, যা পাহাড় থেকে ঢাকা পর্যন্ত বিস্তৃত। এক তরুণীর জন্য দালালেরা নেয় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। বহু বছর এক সন্তান নীতি কার্যকর থাকায় চীনে বিয়ের পাত্রী সংকট দেখা দিয়েছে। তাই চেহারা ও খাদ্যাভ্যাসে মিল থাকায় বাংলাদেশি পাহাড়ি মেয়েরা চীনে সমাদৃত।
পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির প্রত্যন্ত অঞ্চল পানছড়ি। এই বাড়ির ১৫ বছরের এক কিশোরী নিরাশা চাকমা হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায়। দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় তার পরিবার।
নিখোঁজ কিশোরীর বোন নীলা চাকমা জানান, তার ছোট বোন পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছে। চীনে পাচারের উদ্দেশ্যে তাকে ঢাকায় বন্দী করে রাখা হয়েছে।
নীলা চাকমা বলেন, “আমার বোনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়। ও ঢাকায় আছে বলার পর সঠিক লোকেশন জানতে চাইলে সে আমাকে তা বলতে পারেনি।”
অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঢাকা উত্তরার ওই বাড়ি থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে। গ্রেপ্তার করে পাচারচক্রের অন্যতম সুমি চাকমা ও চীনা নাগরিক শাও শোহুয়েকে।
নিরাশা চাকমাকে আইফোন ও নগদ টাকার লোভ দেখিয়ে ঢাকার ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে পরিচয় গোপন করে রাখা হয় আরও কয়েকজন কিশোরীকে।
নিরাশা চাকমা জানায়, যখন সে জানতে পারে তাকে পাচারের জন্য ঢাকায় এনে রাখা হয়েছে, মোবাইল ফোনে সে তার বোনকে তা জানিয়ে দেয়। এভাবে গত এক দশকে প্রায় আট হাজার পাহাড়ি তরুণী চীনে পাচারের তথ্য মিলেছে।
এ বিষয়ে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ ব্যাপারে সচেতন রয়েছে।
একটি মেয়েকে চীনে নিতে ১০ থেকে ২০ লাখ টাকার চুক্তি হয়। পাচার চক্রে থাকে কয়েক স্তরের দালাল।
পাচার চক্রের এক দালাল রুমা চাকমা বলেন, একজন মেয়ে চীনে পাচার করার জন্য দিতে পারলে তাকে এক লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
পাহাড়ি নারী পাচার রোধে আন্দোলনে নেমেছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী। দ্রুতই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।