মাদারীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার উদ্যোগে আয়োজিত কাওয়ালি আসরে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে অন্তত ৪ জন আহত হয়েছেন। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এ ঘটনা ঘটে। হামলার পর পুরো আসরটি পণ্ড হয়ে যায়।
পরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া আহতদের মধ্যে ৩ জনকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন— মাদারীপুর সরকারি কলেজের গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নিয়ামত উল্লাহ (২২), হিসাববিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আশিকুর তামিম আশিক (২৩), দ্বাদশ শ্রেণির ইসতিয়ার আহম্মেদ (২০) ও শিক্ষার্থী কানিজ ফাতেমা সাথী (২১)।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে মাদারীপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি অংশ সর্বস্তরের ছাত্র–জনতার ব্যানারে কাওয়ালি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে জুবায়ের আহম্মেদ নাফির নেতৃত্বে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। একপর্যায়ে নিয়ামত উল্লাহ নামে এক শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা শাবাব, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এইচ এম সালাউদ্দিন এবং সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে দুইপক্ষের সমবোঝায় অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে প্রশাসনের লোকজন চলে গেলে আবারও শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। এতে আহত হন আরও তিন শিক্ষার্থী।
আহতের পক্ষের শিক্ষার্থী মিথিলা ফারজানা বলেন, “দেশের বিভিন্ন স্থানে কাওয়ালি সংগীত হওয়ায় আমরা মাদারীপুরে ছাত্র–জনতার উদ্যোগে কাওয়ালি গানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। সেখানে অতর্কিতভাবে একটি গ্রুপ হামলা চালিয়ে আমাদের ভাইদের আহত করে। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।”
অপর দিকে জোবায়ের হোসেন নাফির গ্রুপের শিক্ষার্থী দিহান বলেন, “যারা কাওয়ালি অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে তারা ভুয়া। এখনো যেখানে আমাদের ভাইদের রক্তের দাগ শুকায়নি, সেখানে তারা নাচ–গানের আসর বসিয়েছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।”
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এইচ এম সালাউদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এসময় দুপক্ষকে বুঝিয়ে মীমাংসার চেষ্টা করে পুলিশ। এরপর পরিস্থিতি শান্ত হলেও দ্বিতীয় দফায় হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয় কয়েকজন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।