খুলনার কয়রায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর নজরুল ইসলামকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ নামের এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (৫ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার দেয়াড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ উপজেলার উত্তরচক কামিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
ভুক্তভোগী নজরুল ইসলাম বলেন, “শুক্রবার কয়রা উত্তরচক কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পরীক্ষা ছিল। আমি সেখানে নিয়োগবিধি অনুযায়ী ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। অধ্যক্ষ পদে লিখিত পরীক্ষায় কেউ পাস করেনি। তারপরও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ তার পছন্দের প্রার্থী মাদ্রাসাটির উপাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমানকে নিয়োগ দিতে চাপ সৃষ্টি করেন। এ সময় আমি বিধি মোতাবেক নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে চাই। পরে আমি ও নিয়োগ বোর্ডের ডিজির প্রতিনিধির গাড়িতে করে ফেরার পথে আমাদের গাড়ি থামিয়ে প্রথমে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ আমাকে চড় মারেন এবং আমার হাতে থাকা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন।“
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, “এ সময় আমাকে ফেলে রেখে ডিজির প্রতিনিধি চেয়ারম্যানের কথামতো নিয়োগের কাগজে স্বাক্ষর করে চলে যান। আমি রাজি না হওয়ায় চেয়ারম্যানের সঙ্গে থাকা ২০-২৫ জন লোক আমাকে মারধর করে। এরপর চেয়ারম্যানের বাড়ির একটি কক্ষে আটকে সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চালিয়ে জোরপূর্বক নিয়োগের কাগজে স্বাক্ষর করে নেয়।“
কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুজিত কুমার বৈদ্য বলেন, “আহত প্রফেসর নজরুল ইসলামকে রাতে হাসপাতালে ভর্তি করার পরে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।”
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, “ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি প্রফেসর নজরুল ইসলামকে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। নিয়োগ পরীক্ষা শেষে তিনি আমার বাড়িতে নাশতা করতে আসার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছি।”
ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, “আমি মাদ্রাসাটির সভাপতি হওয়ার পর একটি পক্ষ আমাকে মেনে নিতে পারেনি। এমনকি এবার অধ্যক্ষ নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করতে স্থানীয় সংসদ সদস্যকেও ব্যবহার করে ডিও লেটার দিয়েছে। এটিও ওই ষড়যন্ত্রের একটি অংশ।”
কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম এস দোহা বলেন, “ঘটনা জানতে পেরে আমি কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পর প্রফেসর নজরুল ইসলাম উন্নত চিকিৎসা নিতে খুলনা যেতে চাইলে আমি সার্বিক ব্যবস্থা করেছি। এ ব্যাপারে অভিযোগ সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”