মাদারীপুর-৩ আসনের কালকিনিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এক কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে নৌকা প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ওই ব্যক্তি।
নিহত ওই ব্যক্তির নাম এসকেন্দার খাঁ (৭০)। তিনি লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সদস্য এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল) মোসা. তাহমিনা বেগমের সমর্থক ও কর্মী ছিলেন। তিনি কালকিনির ভাটাবালী গ্রামের আমির হোসেন খাঁর ছেলে।
নিহতের পারিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে বাড়ির সামনের রাস্তায় হাঁটতে বের হন এসকেন্দার। এ সময় মাদারীপুর-৩ আসনের নৌকা প্রার্থী আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের সমর্থক ও লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল হক ব্যাপারীর লোকজন হঠাৎ তার ওপর হামলা চালান। এসকেন্দার খাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করেন তারা।
এ সময় আশপাশের লোকজন বাধা দিলে আরেকজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়। তাদের চিৎকার শুনে লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা দুজনকে উদ্ধার করে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে দুজনকেই বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১২টার দিকে এসকেন্দার খাঁ মারা যান।
লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন গেন্দু কাজী বলেন, “আমাদের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী এসকেন্দার খাঁ সকালে তার বাড়ির সামনে হাঁটতে বের হলে হঠাৎ নৌকার সমর্থক ফজলুল হক ব্যাপারীর লোকজন তাকে কুপিয়ে জখম করে। পরে তাকে বরিশালে পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।”
এ বিষয়ে নৌকার সমর্থক ও লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান অভিযুক্ত ফজলুল হক ব্যাপারীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি।
মাদারীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোসা. তাহমিনা বেগম বলেন, “আমার এক কর্মীকে নৌকার পক্ষের লোকজন কুপিয়ে হত্যা করেছে। আসলে সাধারণ ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক ছড়াতে তারা এগুলো করছে।”
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার সমর্থকদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নৌকার প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। তিনি বলেন, “পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে এসকেন্দারের ওপর হামলা করা হয়। পরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। কিন্তু একটি পক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে।”
কালকিনি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মারগুব তৌহিদ বলেন, গ্রাম্য দলাদলি ও রাজনৈতিক ইস্যুকে কেন্দ্র করে সকাল ৭টার দিকে এসকেন্দার খাঁকে প্রতিপক্ষের লোকজন কুপিয়ে জখম করেছে। তাকে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ঘটনাস্থলে উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।