• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঘোড়ার গাড়িতে ইমামের রাজকীয় বিদায়


নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৪, ০৯:৫৭ পিএম
ঘোড়ার গাড়িতে ইমামের রাজকীয় বিদায়

দীর্ঘ ৪১ বছরের কর্মময় জীবন শেষে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে মসজিদের ইমামকে বিদায় জানিয়েছেন গ্রামবাসী। হাতে তুলে দিলেন নগদ পৌনে এক লাখ টাকা এবং উপহার সামগ্রী।

শুক্রবার (৩১ মে) জুমার নামাজ শেষে ব্যতিক্রমী ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের বাগাতিপাড়ার ক্ষিদ্রমালঞ্চি গ্রামে। বিদায়ী ইমাম মো. মুনসুর আলী পার্শ্ববর্তী শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানান, ক্ষিদ্রমালঞ্চি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মো. মুনসুর আলী ১৯৮৩ সালে ইমামের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। একই মসজিদে দীর্ঘ ৪১ বছর দায়িত্ব পালনের পর বয়সজনিত কারণে তিনি অবসর নেন। প্রিয় ইমামকে বিদায় জানাতে গ্রামবাসী ওই মসজিদে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মসজিদ কমিটির সভাপতি আরশেদ আলীর সভাপতিত্বে ও আব্দুল হালিমের পরিচালনায় ইমাম মুনসুর আলীর কর্মময় জীবনের ওপর আলোকপাত করে বক্তব্য দেন মসলেম উদ্দিন, আলাউদ্দিন, আসমত আলী, সেলিম রেজা, আব্দুল আজিজ, সাইদুর রহমান প্রমুখ।

শেষে ওই মসজিদসহ আশপাশের পাঁচটি মসজিদের মুসল্লিরা ইমামকে পৌনে এক লাখ টাকা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করেন।

এছাড়া ইমামের বিদায় উপলক্ষে মসজিদে উপস্থিত মুসল্লিদের মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়। শেষে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে পুরো এলাকা ঘুরিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয় ইমাম মুনসুর আলীকে। বক্তব্য প্রদানকালে সবাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

এসময় গ্রামের নারী-পুরুষরা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বিদায় জানান প্রিয় ইমামকে। ব্যক্তিগত জীবনে মুনসুর আলী তিন মেয়ে ও দুই ছেলের বাবা।

বিদায়ী ইমাম মো. মুনসুর আলী বলেন, “জীবনের শুরুতে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের মুহুরীর কাজ করেছিলাম। কিন্তু দু-তিন দিন পর ভালো না লাগায় সে কাজ ছেড়ে এসে এ মসজিদে ইমামতি শুরু করি।”

দীর্ঘদিন পর অবসর নেওয়ায় গ্রামবাসীর এমন বিদায়ে তিনি মুগ্ধ। এ সময় চোখে ছিল পানি, তবুও স্নিগ্ধ হাসি দিয়ে গ্রামবাসীর কাছে বিদায় নেন।

বিদায় বেলায় তিনি কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন গড়া এবং ঈমান ও আমলের ওপর সবাইকে জীবন পরিচালিত করার আহ্বান জানান।

Link copied!