কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ ঘিরে বেজায় খুশি কুড়িগ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। বড় পর্দায় খেলা দেখানোয় বিশ্বকাপের উন্মাদনায় বেচা-কেনা ভালো হওয়ায় এমন খুশির আমেজ দেখা গেছে ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে।
বিশ্বকাপের শুরু থেকেই কুড়িগ্রাম পৌরসভার উদ্যোগে ও জেলা তথ্য অফিসের সহযোগিতায় শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে বড় পর্দায় দেখানো হচ্ছে কাতার বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচ।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে কাতার বিশ্বকাপের কোয়াটার ফাইনালের শেষ ম্যাচে কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় ফ্রান্স-ইংল্যান্ডের খেলা। বড় পর্দায় বিশ্বকাপ ফুটবলের খেলা দেখার এক ফাঁকে কথা হয় ঝালমুড়ির ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. জীবনের সঙ্গে। তিনি বলেন, “খেলা থাকায় ব্যবসা ভালো হচ্ছে। মাঝে-মধ্যে খেলাও দেখি, ব্যবসাও করছি। বাড়তি আয়ের আসায় গভীর রাত পর্যন্ত দোকান খুলে রেখেছি।”
আরেক ব্যবসায়ী পপকন বিক্রেতা মো. শাহজাহান বলেন, “পৌরসভা থেকে ঈদগাহে মাঠে বড় পর্দায় কাতার বিশ্বকাপ ফুটবলের ম্যাচগুলো দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। লোকজন রাত জেগে খেলা দেখছেন। আমিও দোকান খুলে রাখি। দর্শকরা খেলা দেখার পাশাপাশি খাবার কিনে নেন। এতে আমার কিছুটা বাড়তি আয় হচ্ছে।”
পুরাতন শহরের ঝিনুক সিনেমা হল মোড়ের চা বিক্রেতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “বিশ্বকাপ খেলার আগে রাত ১১টায় দোকান বন্ধ করতাম। এখন অতিরিক্ত চার ঘণ্টা দোকান খুলে রাখি। এতে প্রতিদিন ১৫০০-২০০০ টাকার মতো বেশি বিক্রি করতে পারছি। এ বাড়তি আয়ে আমি বেশ খুশি।”
শুধু কুড়িগ্রামের ঈদগাহে মাঠেই নয় বড় পর্দায় খেলা দেখানো হয় শহরের সার্দ্দির মোড়, খাঁনপাড়া, হরিকেশ মোড়, হরিসভা পাড়া, পোস্ট অফিস পাড়াসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায়।
সাদ্দির মোড়ের দোকানে আসা ক্রেতা মো. রশিদুল ইসলাম জানান, তিনি বিশ্বকাপের প্রতিটা খেলা এখানের বড় পর্দায় দেখছেন। বড় পর্দায় খেলা দেখার মজা আলাদা। খেলা চলাকালীন এখানকার দোকান থেকে বন্ধুদের সঙ্গে চা বিস্কুট কিনে খান। পাশাপাশি ঝাল-মুড়ি ,পপকন এসবও কেনেন।
আরেক ক্রেতা দীপ্ত রায় বলেন, “রাত জেগে বন্ধুদের সঙ্গে খেলা দেখি। তখন আশ-পাশের সব দোকান বন্ধ থাকে। কিন্তু খেলা যেখানে দেখাচ্ছে এর আশ-পাশের দোকান খোলা থাকায় আমাদের জন্য ভালই হয়েছে। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারি। খেলার সঙ্গে খেতে পারলে খেলাটা আরও জমে ওঠে।”
কুড়িগ্রামের এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, নিত্য-প্রয়োজনের দাম বাড়ায় শখের খাওয়ার এসব খাবারের দোকানের ব্যবসা কিছুটা মন্দা যাচ্ছিল। তবে বিশ্বকাপ খেলাকে ঘিরে বিশ্বকাপের উন্মাদনায় দর্শক বেশি থাকায় খেলা চলাকালীন চা-কপি, পান, চিপস-চানাচুর এসব বিক্রি হওয়াতে তাদের মন্দাভাব কিছুটা কাটবে বলেও প্রত্যাশা করেন অনেকে।