নাম শুনে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আকার আকৃতি ও ওজনে আসলেই ‘বিগ বস’। তার ওজন প্রায় ১ হাজার ৭০০ কেজি, দাম চাওয়া হচ্ছে ৩০ লাখ টাকা। উপহার হিসেবে এর ক্রেতা পাবেন মোটরসাইকেল। আলোচিত ও সাড়া জাগানো বিগ বসকে দেখতে প্রতিনিয়ত ভিড় জমাচ্ছেন শত শত মানুষ।
৬ বছর আগে ৯০ দিন বয়সী ও ২৭ কেজি ওজনের গরুটিকে কেনেন আফিল উদ্দিন। আদর করে নাম রেখেছিলেন বিগ বস। লালন-পালনের শুরু থেকে খাওয়াতেন প্রাকৃতিক খাবার ও ফলমূল। ছয় বছরে গরুটিকে বিশাল আকৃতির করেছেন তিনি। গত বছর গরুটির দাম ২২ লাখ বললেও বিক্রি করেননি তিনি। এবারে কাঙ্ক্ষিত দামে বিক্রির আশা তার।
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ডাঙ্গীপাড়া ইউনিয়নের তালতলা গ্রামের বাসিন্দা আফিল উদ্দিন। তিনি শখের বসে লালন পালন করা শুরু করেছিলেন গরুটিকে। গত বছর সাড়ে ১৫০০ কেজি ওজনের বিগবসের দাম হাঁকা হয়েছিল ৩০ লাখ টাকা। এবারেও ১৭০০ কেজি ওজনের বিগ বসের দাম একই হাঁকা হয়েছে। আর ক্রেতা উপহার হিসেবে পাবেন ১৬০ সিসি একটি পালসার অথবা আরটিআর অ্যাপাচি মোটরসাইকেল।
বিগ বস লম্বায় ১০ ফিট ও উচ্চতায় ৫ ফিট ১০ ইঞ্চি। ঘর থেকে বের করতে প্রয়োজন হয় ১৫ জনের অধিক মানুষ। খাবার হিসেবে থাকে খেসারির ডাল, মসুর ডাল ও খুদি। এ ছাড়াও ফল হিসেবে আপেল, কমলা, আঙুর, কলা ও ডাব খাওয়ানো হয়। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২ হাজার ৫০০ টাকার খাবার খাওয়ানো হয় বিগ বসকে।
স্থানীয় শরিফুল ইসলাম বলেন, “নিজের সন্তানের মতো যত্ন করে গরুটিকে বড় করেছেন আফিল উদ্দিন ও তার স্ত্রী। তাদের দেখে আমাদের এখানকার অনেকে এভাবে গরু লালন-পালনের পরিকল্পনা করছেন।”
জেলার বালীয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর থেকে গরুটি দেখার পর ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান বলেন, “ফেসবুকে দেখার পর দেখতে এসেছি। অনেক লোকজন দেখতে আসছে। এত বড় আকৃতির গরু কখনো দেখিনি।”
গরুটির মালিক আফিল উদ্দিন বলেন, “ছয় বছর আগে মাত্র ৯০ দিন বয়সে ২৭ কেজি ওজনের এই বিদেশি (এল এল সি) জাতের গরুটিকে ক্রয় করি। তখন থেকে প্রাকৃতিক খাবার ও ফলমূল তাকে রুটিন করেই খেতে দেওয়া হয়। গত বছর এই গরুর দাম ২২ লাখ টাকা বললেও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় বিক্রয় করিনি। এবার আশা করছি সেই দামে বিক্রয় করতে পারব।”
তিনি আরও বলেন, “কোরবানির আশায় এত বড় করেছি গরুটিকে। ৩০ লাখ টাকা হলে বিক্রি করবে এবং ক্রেতাকে উপহার হিসেবে ১৬০ সিসির পালসার অথবা অ্যাপাচি আরটিআর মোটরসাইকেল দেবো।”
এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, “এমন বড় আকৃতির বা ওজনের দ্বিতীয় গরু জেলায় নেই। আফিল উদ্দিন এই ষাঁড়টিকে খুব যত্নসহকারে লালন-পালন করেছেন। এই গরু মোটাতাজাকরণে কোনো ক্ষতিকর ওষুধ দেওয়া হয়নি। আমরা নিয়মিত গরুটি দেখেছি এবং পরামর্শ দিয়েছি।”