আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সক্ষমতা, দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ আছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি বলেছেন, “আগামী দিনেও নির্বাচনী দায়িত্ব সফলভাবে পালন করতে সক্ষম হব বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।”
বুধবার (১১ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় গাজীপুরের টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা মাঠ পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের এসব কথা বলেন তিনি।
নির্বাচন অনুষ্ঠানে পুলিশের ভূমিকার বিষয়ে আইজিপি বলেন, “আমরা সব সময় বলে থাকি পুলিশ লাইফ ইজ দ্য চ্যালেঞ্জিং লাইফ। কোনদিন কোন চ্যালেঞ্জ থাকবে, তা অজানা থাকে। এরপরও প্রতিদিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা আমরা করে থাকি। দীর্ঘদিন চাকরি করার পর আমাদের অভিজ্ঞতা হয়েছে। এ অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদের আইনশৃঙ্খলাজনিত যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার মতো সক্ষমতা, দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ রয়েছে। এটা দিয়েই আমরা আগামী দিনের যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম। দেশবাসীকে আমরা আশ্বস্ত করতে চাই বাংলাদেশ পুলিশের যে সক্ষমতা রয়েছে, তা দিয়ে আমরা জঙ্গিবাদসহ যেকোনো চ্যালেঞ্জে সফল হয়েছি। এর মাধ্যমে আমরা সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থার জায়গা তৈরি করতে পেরেছি। এই আস্থাকে ধরে রাখতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।”
ইজতেমায় নির্ভয়ে সবাই অংশ নিতে পারবেন জানিয়ে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, “সাধারণ মানুষের ইজতেমা মাঠে প্রবেশের সুবিধার্থে আমরা ম্যাপ তৈরি করে দিয়েছি। বিভিন্ন পয়েন্টে তাদের জন্য বিভিন্ন প্রকারের নির্দেশনা টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা করে কোন বিভাগের গাড়ি কোথায় পার্কিং করা থাকবে, কোন রাস্তা কখন খোলা বা বন্ধ খাকবে, সেই নির্দেশনা দিয়েছি। পকেটমারসহ নানা অপরাধ কার্যকলাপ রুখতে আমাদের প্যাট্রল টিম কাজ করবে।
নিরাপত্তার বিষয়ে আইজিপি বলেন, “আমরা ওয়াচ টাওয়ার ও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করব। সাদা পোশাক ও পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগ ১৪টি কন্ট্রোল রুম তৈরি করেছে।”
ইজতেমায় আসা বিদেশি মুসল্লিদের বিষয়ে তিনি বলেন, “গাজীপুরের টঙ্গী ইজতেমায় বিদেশি মুসল্লি যারা আসেন তাদের এয়ারপোর্টে আয়োজকেরা রিসিভ করে থাকেন। তাদের সহায়তার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষিত টুরিস্ট পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। তারা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে আসতে পারেন সে জন্য ইমিগ্রেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। ইমিগ্রেশনে যেন কোনো জটিলতার সম্মুখীন হতে না হয়, আসার পথে তাদের ট্রাফিক ব্যবস্থা যাতে সুগম হয় সেজন্য আমরা ব্যবস্থা রেখেছি।”
র্যাবের কন্ট্রোল রুম থাকবে, ডিএমপি তার এলাকায় কন্ট্রোল রুম খুলবে, এসবি, এটিও, সিআইডি, নৌপুলিশ, অবজারভারভেশন টিম থাকবে, র্যাবের হেলিকপ্টার টহল থাকবে। ডগ স্কোয়াড টিম, মোবাইল প্যাট্রল টিম, বোম ডিস্পোজাল টিম থাকবে। মোনাজাতের দিন সুষ্ঠুভাবে আখেরি মোনাজাত ও জুমার নামাজ যাতে মুসল্লিরা সুষ্ঠুভাবে অংশ নিতে পারে সে জন্য সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে বলেও জানান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
আইজিপি বলেন, “ইজতেমাস্থলে যে ৯১টি খিত্তায় বিভক্ত, খিত্তাভিক্তিক আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র্যাব) পাশাপাশি ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, সিআইডি, নৌপুলিশ, অ্যান্টিট্যারিজম ইউনিট, রেলওয়ে পুলিশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। এর সঙ্গে সরকারের অন্যান্য বিভাগও সমন্বিতভাবে কাজ করছে। আমরা একই সঙ্গে সবাই মিলে একযোগে কাজ করছি, যাতে মুসল্লিরা শান্তিপূর্ণভাবে এই আয়োজনে শরিক হতে পারেন।”
ইজতেমা মাঠ পরিদর্শনে বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজিপি ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রধান হাবিবুর রহমান, গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দেলোয়ার হোসেন ও গাজীপুর পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।