• ঢাকা
  • সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পুলিশ বন্ধুর সহায়তায় যেভাবে স্ত্রীকে খুন করেন স্বামী


চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৪, ১২:১৩ পিএম
পুলিশ বন্ধুর সহায়তায় যেভাবে স্ত্রীকে খুন করেন স্বামী

বেড়ানোর কথা বলে স্ত্রী চট্টগ্রাম নগর থেকে জেলার আনোয়ারায় নিয়ে যান স্বামী ইয়াসিন আরাফাত। সেখানে স্বামীর এক পুলিশ বন্ধুসহ চারজন মিলে মাদক সেবন করেন। একপর্যায়ে বন্ধুদের সাহায্য নিয়ে স্ত্রী আমেনা বেগমকে ছুরিকাঘাতে খুন করেন স্বামী। পরে পালিয়ে যান দুবাইয়ে।

এ ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের পর রহস্য উদ্‌ঘাটন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। 

শনিবার (২৬ অক্টোবর)  সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে। বিদেশে পলাতক ইয়াসিরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন নিহত আমেনার স্বামীর বন্ধু মো. নাহিদ ও মো. ইরফান। এর মধ্যে ইরফান রাঙামাটি জেলায় কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। ২১ অক্টোবরের পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। 

বুধবার (২৩ অক্টোবর) তারা চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। 

এর আগে তাদের খাগড়াছড়ি ও বাঘাইছড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।

৩ অক্টোবর দুপুরে আনোয়ারা থানার বৈরাগ এলাকার চায়না ইকোনমিক জোন কার্যালয়ের পাশে পরিত্যক্ত একটি ইটভাটা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে রাতে পিবিআই আঙুলের ছাপ নিয়ে পরিচয় শনাক্ত করে। এ ঘটনায় নিহত আমেনার বাবা কামাল উদ্দিন বাদী হয়ে আনোয়ারা থানায় মামলা করেন।

পুলিশ জানায়, আমেনার এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তার আগের সংসারে দুই সন্তান ছিল। প্রবাসী ইয়াসির আরাফাতের সঙ্গে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। সেই সংসারে একটি সন্তান রয়েছে। কিন্তু ইয়াসিরের পরিবার আমেনাকে মেনে নেয়নি। এ কারণে আমেনাকে নগরের বাকলিয়ার তক্তারপুল এলাকায় একটি বাসায় রাখতেন। 

ইয়াসির আমিরাতের দুবাইপ্রবাসী। কিছুদিন আগে তিনি দেশে আসেন। স্ত্রী আমেনাকে না জানিয়ে আরেকটি বিয়ে করেন তিনি। পরে সেটি আমেনা জানতে পারেন। বিষয়টি নিয়ে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য ছিল।

আদালত সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে আসামিরা খুনের কথা স্বীকার করে বিস্তারিত বলেন। এতে উল্লেখ করেন, খুন হওয়া গৃহবধূ আমেনার স্বামী ইয়াসির আরাফাত গত ৩০ সেপ্টেম্বর ফোন করে নাহিদকে জানান তিনি দুবাই থেকে এসেছেন। ১ অক্টোবর রাতে ইয়াসির আমেনাসহ চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বন্ধু ইরফানের বাড়িতে যান। নাহিদ আগে থেকে সেখানে ছিলেন। রাত তিনটার দিকে টানেলে ঘুরতে বের হওয়ার পরিকল্পনা করেন। পরে ইরফান তাঁদের আনোয়ারার একটি পাহাড়ে নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর আমেনা ও ইয়াসিরের মধ্যে ঝগড়া হয় বিয়ে নিয়ে। একপর্যায়ে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ইরফান আমেনাকে ছুরিকাঘাত করেন। কিছুক্ষণ পর আমেনার মৃত্যু হলে তিনজনে মিলে নালার মধ্যে লাশ ফেলে দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পরিদর্শক শাহাদাত হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার দুজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। 

বিদেশে পলাতক ইয়াসিরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

মামলার বাদী ও নিহত আমেনার বাবা কামাল উদ্দিন বলেন, “আমার মেয়েকে বেড়ানোর কথা বলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তার স্বামী বন্ধুদের সহায়তায় খুন করেছেন। তাকে বিদেশ থেকে ধরে আনা হোক। ইয়াসিরের ফাঁসি চাই।”

Link copied!