বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার সেনা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে কয়েকদিন ধরে গোলাগুলি চলছে। এতে সীমান্তের এপারে থাকা বাংলাদেশিদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল দশটার দিকে মিয়ানমার থেকে আসা গুলিতে দুই বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। এরপর থেকে অনেকেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল দশটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন তুমব্রু ক্যাম্প পাড়ার বাসিন্দা প্রবীরচন্দ্র ও রহিমা বেগম (৫০)।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক দিন ধরে মিয়ানমারের ভেতরে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর সংঘাত চলছে। এতে ব্যবহার করা হচ্ছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক। এসব গোলাবারুদ আর বিস্ফোরকের বিকট শব্দে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের সীমান্ত এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। অনেকে আবার বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ভোর থেকে মিয়ানমার সীমান্তের অভ্যন্তরে ব্যাপক গোলাগুলি হচ্ছে। মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে বাংলাদেশের দুইজন আহত হয়েছেন। এর আগে ভোরে একটি মর্টারশেল এসে বসতঘরে পড়ে। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে দেশটির জান্তা বাহিনীর ১৪ সদস্য আশ্রয় নিয়েছে তুমব্রু বিজিবি ক্যাম্পে। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে আছে। আমরা সবাইকে বলেছি কোনো কাজ ছাড়া ঘর থেকে বের না হতে।“
তুমব্রুর উত্তরপাড়ার বাসিন্দা রহমত বলেন, “যেভাবে মিয়ানমার থেকে গুলি এসে পড়ছে তাতে পরিবার নিয়ে নিজেদের সেখানে আর নিরাপদ মনে করছি না। আপাতত মরিচ্চা চাচার বাসায় আশ্রয় নিচ্ছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফিরব।”
আরেক বাসিন্দা মনসুর আলী বলেন, “আমরা গতকাল (৩ ফেব্রুয়ারি) একটি সিএনজিতে গুলি লাগতে দেখেছি। আজ আবার এক কৃষকের শরীরে গুলি লেগেছে। এমন পরিস্থিতিতে কেউ নিরাপদ নয়। তাই অন্য জায়গায় যাচ্ছি। সীমান্তের পরিস্থিতি এখনো থমথমে। আমরা আতঙ্কে রয়েছি।”
ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আলম বলেন, “আমার ওয়ার্ডের কিছু মানুষ পার্শ্ববর্তী এলাকায় আশ্রয় নিচ্ছেন। ভোর থেকে গোলগুলির বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে।”
ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ি তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মাহাফুজ ইমতিয়াজ ভুঁইয়া বলেন, “এখানকার পরিস্থিতি এই মুহূর্তে কিছুটা স্বাভাবিক আছে। সীমান্ত এলাকায় কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। বিজিবি ও আমরা তৎপর আছি। আতঙ্কিত হয়ে এলাকা ছাড়ার খবর তেমন নেই।”