ফরিদপুরে সাত বিদেশি নাগরিক তাদের নিজস্ব ভাষায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) বিকেলে ফরিদপুরের শেখ জামাল স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
সেখানে নিজস্ব ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ দেওয়া বিদেশি নাগরিকরা হলেন আমেরিকার নাগরিক জ্যাকব বার্লিন, যুক্তরাজ্যের জয়া বার্লিন, ভারতের রবীন্দ্র মুরালিধর শর্মা, জাপানের নাকানো কজি, শ্রীলংকার রেজি পিটার সেবাসটেইন, ফিলিস্তিনের কারাম রাইদ আইয়াড ও নেপালের সুমিত কোহার।
এর আগে ফরিদপুর শহর প্রদক্ষিণ করে ১১০৮ জন স্কুল শিক্ষার্থী ক্ষুদে বঙ্গবন্ধুদের একটি দল। ভাষণের ১১০৮টি শব্দকে ধারণ করে একেকটি শব্দের প্ল্যাকার্ড নিয়ে তারা স্মরণ করে ইতিহাসের সেই মহানায়ককে।
এরপর শুরু হয় ১১০৮ শব্দ খচিত বেলুন উড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর অমর বাণীকে বাংলার আকাশে ছড়িয়ে দেয়ার অভূতপূর্ব সেই পর্ব। বেলুন উড়িয়ে ভাষণ উৎসবের উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান এমপি।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল আহসান তালুকদারের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য এ কে আজাদ, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ঝর্ণা হাসান, ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদ ক্যাপ্টেন বাবুল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. ইশতিয়াক আরিফ, ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা ও ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইয়াসিন কবীর ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্টদের এমন ব্যতিক্রম আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেন, “বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে যা বলেছেন তা বিদেশি অতিথিদের বক্তৃতায় ভিন্নমাত্রায় উঠে এসেছে। নতুনভাবে মূল্যায়িত হয়েছে ঐতিহাসিক ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃত এই কথামালা। নতুন প্রজন্মের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ উৎসবের সকল পর্বের বিষয়গুলো শুধু মুখে নয়, হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করার জন্য তিনি আহ্বান জানান।”
মন্ত্রী বলেন, “শিক্ষক অভিভাবকদের দায়িত্ব বঙ্গবন্ধু ও তার আদর্শকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে নানা আয়োজন ও উদ্যোগের মধ্য দিয়ে এভাবেই প্রথিত করা, যাতে তারা ভুলে না যায় বাংলার প্রকৃত ইতিহাস।”
জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ১১০৮টি শব্দের নিখুঁত গাঁথুনিতে অমর এ ভাষণের এক একটি শব্দ, এক একটি পুস্তক। বিশ্বের মুক্তিকামী ও নিপীড়িত সকল জাতিগোষ্ঠীর মুক্তির চিরন্তন অনুপ্রেরণা। রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুখনিঃসৃত এই শব্দমালা বাঙালি জাতিকে এনে দিয়েছে মুক্তির স্বাদ, নিজস্ব ভূখণ্ড, সমৃদ্ধির সোপান ও একটি স্বাধীন বাংলাদেশ।