উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে ফের টাঙ্গাইলের যমুনা নদীসহ জেলার ছোট-বড় সব নদ-নদীর পানি বেড়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে জেলার বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চলে রোপনকৃত ধানের চারা, শাক-সবজিসহ ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। এর আগে কয়েক সপ্তাহ ধরে নদীর পানি কমে কৃষকরা নতুন করে ধান চাষসহ রবি ফসল রোপন শুরু করেছিলেন।
টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ি পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৬৬ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ৫৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার এবং ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ৩৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া জেলার বংশাই নদীর পানি মির্জাপুর পয়েন্টে ৪৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৭৩ সেন্টিমিন্টার, মধুপুর পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার, কাউলজানী পয়েন্টে ৯৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার, ফটিকজানি নদীর নলচাপা পয়েন্টে ৭৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলার ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কয়েড়া গ্রামের কৃষক আব্বাস আলী, হযরত আলী ও আনোয়ার মিয়া বলেন, “আগের বন্যার পানি কমে যাওয়ায় নতুন করে ফের জমিতে ধানের চারা রোপন করেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ টানা দুদিনের ভারী বৃষ্টির পানিতে ফের সেগুলো তলিয়ে গেছে। শাক-সবজির ক্ষেতসহ অনেকের পুকুরও তলিয়েছে। এ বছর আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারছি না।”
টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী নূরুল আমিন জানান, “কয়েক সপ্তাহ আগেও টাঙ্গাইলের যমুনা নদীসহ জেলার ছোটবড় সকল নদ-নদীর পানি কমে যায়। কয়েকদিন যাবৎ আবার উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও দুই দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। তবে ধারণা করছি বড় ধরণের বন্যার সম্ভাবনা নেই। আরও কিছুদিন যমুনাসহ জেলার অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহতের আশঙ্কা করছি।”
টাঙ্গাইলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আহসানুল বাশার জানান, বৃষ্টি হওয়ায় ধানের জন্য ভালো হয়েছে। ধানের চারা পানির নিচে তলিয়ে গেলেও চার-পাঁচ দিনের মধ্যে কিছু হবে না। আগাম সবজি টাঙ্গাইলে খুব কম চাষ হয়। যারা আগাম সবজি চাষ করেছে খুব একটা ক্ষতি হবে না।