গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতের কারণে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে জেলায় ১৮২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জেলা প্রশাসন, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস যৌথভাবে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরে যেতে মাইকিং ও সচেতন করা হলেও মানতে নারাজ বাসিন্দারা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, রাঙ্গামাটি জেলায় মোট ১৮২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে শহরে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। ইতোমধ্যে পাহাড় ধসের শঙ্কায় রাঙ্গামাটি বেতার কেন্দ্র, বিএম ইন্সটিটিউট ও লোকনাথ মন্দিরে লোকজন আশ্রয় নিয়েছে। তবে আশ্রয়কেন্দ্রে অব্যবস্থাপনা নিয়ে অভিযোগ আছে অনেকেরই।
রাঙ্গামাটি বেতার কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া জাকের হোসেন বলেন, “আমাদের জোর করে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হচ্ছে, কিন্তু খাবার দেওয়া হচ্ছে না। শুধু পাউরুটি কলা দিয়ে দায়সারা হচ্ছে। এদিকে ঘরে ফেলে আসা গবাদি পশু চুরি হচ্ছে।”
পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী শিমুলতলী বাসিন্দা আমেনা বেগম বলেন, “২০১৭ সালে পাহাড় ধসে আমার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। পরে কেউ আমার বাড়ি বানিয়ে দেয়নি। এখন আর আশ্রয়কেন্দ্রে যাব না, মরলে ঘরেই মরব।”
একই এলাকার মোশারফ হোসেন বলেন, “প্রশাসনের লোকজন এসে আমাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলেছে। বেশি বৃষ্টি হলে তখন আশ্রয়কেন্দ্রে যাব।”
এদিকে অতিবৃষ্টিতে জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যা দিঘীনালা সড়কের দুই টিলা এলাকাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কের পাশ ও পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ বলেন, “দুর্যোগ মোকাবিলায় পুলিশের সদস্যদের সর্বাত্মকভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া জেলা পুলিশের সকল সদস্যদের যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসনের সঙ্গে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, “আমরা ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সব প্রস্তুতি রেখেছি। যেন প্রাণহানি না হয় সেদিকে জোর দিচ্ছি। প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী মাঠে কাজ করছে। জেলার ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিটি এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রে খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।”