ব্যতিক্রমী উদ্যোগে গাছের প্রতি নিজের ভালবাসা প্রকাশ করেছেন লালমনিরহাটের বৃক্ষপ্রেমী হাবিবুর রহমান হাবিব। নিজের মোটরসাইকেলটি সাজিয়েছেন নানা প্রজাতির গাছ দিয়ে। রাস্তা দিয়ে চলাচল করার সময় মানুষ তাক লাগিয়ে দেখেন তার মোটরসাইকেলটি। এ যেন এক সবুজ বাগান।
জানা যায়, লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাপ্টবাড়ী ইউনিয়নের দুরাকুটি গ্রামের হাবিবুর রহমান হাবিব। পেশায় তিনি একজন রংমিস্ত্রি। অনেক আগে থেকে গাছ ও প্রকৃতিকে খুব ভালবাসেন তিনি। নিজের গ্রামের বাড়িতে বাগান করেছেন। শহরের বাসাতেও নানা প্রজাতির গাছ রয়েছে। কিন্তু এসব ছেড়ে তাকে জীবিকার তাগিতে ছুটে চলতে হয় দেশের নানা স্থানে। তাই সিদ্ধান্ত নেন তার একমাত্র বাহন শখের মোটরসাইকেলটিও তিনি সাজাবেন গাছ দিয়ে। শুরু হয় চেষ্টা। তিন মাসের চেষ্টার পর আসে সফলতা।
তিন বছর ধরে মোটরসাইকেলের চাকা, সিটকভার, তেলের ট্যাঙ্কি, পা দানি, নম্বর প্লেটের ওপর-নিচে সবখানেই বিশেষ কায়দায় গাছ রেখেছেন। সামনে শোভা পাচ্ছে জাতীয় পতাকা ও তাজা গোলাপ ফুল। কৃত্রিম ঘাসের পাশাপাশি জীবন্ত গাছ দিয়ে সাজিয়েছেন তার বাইক। শুধু তাই নয়, হাবিবের পায়ের জুতাও কৃত্রিম সবুজ ঘাস দিয়ে সাজানো। মাথার হেলমেটে রং করেছেন জাতীয় পতাকার রঙে। হাবিবের মোটরসাইকেলের এই সাজসজ্জা দেখে মুগ্ধ মানুষ।
লালমনিরহাটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কাজ করতে গেলেই তিনি তার শখের মোটরসাইকেলটি নিয়ে যান। মোটরসাইকেল ছাড়া অন্য কোনো যানবাহনে সহজে ওঠেন না হাবিব। মাঝে মাঝে পরিবারকেও নিয়ে এ মোটরসাইকেলে ঘোরেন। কিন্তু যেখানেই এ মোটরসাইকেলটি তিনি থামান, সেখানেই ভীড় করেন অনেকে।
মোটরসাইকেল সাজানো গাছের বাগান দেখে অবাক হয়ে আ.রহিম নামের এক ব্যক্তি বলেন, “এমন মোটরসাইকেল আমি প্রথম দেখলাম। অনেক সুন্দর করে গাছ দিয়ে বাইকটি সাজানো। গাছ ও প্রকৃতিকে সঙ্গে নিয়েই তিনি পথ চলছেন। সবুজ গাছপালা ও প্রকৃতির প্রতি অন্যরকম ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছেন হাবিব।”
বৃক্ষপ্রেমী হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, “গাছ লাগানো মোটরসাইকেল নিয়ে আমি সারা দেশে চলাচল করি। সবুজ প্রকৃতিকে প্রায় সবাই ভালোবাসেন। তারপরও অসচেতনভাবে বৃক্ষনিধন হচ্ছে সারা দেশে। প্রতিদিন যে পরিমাণ গাছ নিধন করা হয়। সে পরিমাণ গাছ কেউ লাগায় না। এটা সত্যিই কষ্টের।”
হাবিব জানান, তার এই ভিন্ন রকম আয়োজনের উদ্দেশ্য গাছের প্রতি নিজের ভালোবাসা প্রকাশ এবং গাছ ও প্রকৃতির প্রতি মানুষকে আরও বেশি আকৃষ্ট করা। যাতে তারা বেশি বেশি গাছ লাগান এবং পরিচর্যা করেন।