দুইদিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা ঢলের কারণে তিস্তাসহ রংপুর অঞ্চলের নদ-নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামের চরাঞ্চল ছাড়াও কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এক পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ বার্তায় এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় ব্যারাজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ ছিল ৫১ দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটার। সকাল ৬টায় ছিল ৫১ দশমিক ৭৬ সেন্টিমিটার। সেখানে বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) থেকে মাঝারি ধরনের টানা বর্ষণ হচ্ছে রংপুর অঞ্চলে। এর মধ্যে শুধু রংপুরেই গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব নদীর পানি বিপৎসীমা নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, শনিবার পর্যন্ত রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আছে। এর কারণে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল আগামী দুই দিন পর্যন্ত দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং পরবর্তী একদিন পর্যন্ত নদীগুলোর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। আগামী দুদিন পর্যন্ত লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার তিস্তা নদীর পানি সমতল সতর্ক-সীমায় প্রবাহিত হতে পারে। এসব জেলার নদী তীরবর্তী চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
অন্যদিকে রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদ ও তার ভাটিতে যমুনা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী চার দিন পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
এদিকে টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধির ফলে রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার সব নদ-নদীর পানির পাশাপাশি বিলের পানি বৃদ্ধিও অব্যাহত আছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। সেই সঙ্গে ফসলি জমিতে পানি ওঠায় নষ্ট হচ্ছে আগাম শীতকালীন শাকসবজি ও বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল।
ডালিয়াস্থ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন বলেন, অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানির চাপ সামলাতে তিস্তার ৪৪ জলকপাট খোলা রাখা হয়েছে।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর জেলায় ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। রংপুরের কোথাও কোথাও আরও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।