কুড়িগ্রামে বেড়েই চলছে তিস্তা-ধরলাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি। ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও গঙ্গাধর নদে পানিবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ভাঙনের কারণে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে গতকাল রাতে কোনো বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়নি।
শুক্রবার (২১ জুন) সকাল ৬টায় কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা নদীর পানি তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে কিছুটা কমে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গাধর ও দুধকুমার নদে পানি বাড়লেও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও গঙ্গাধর নদে পানিবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গতকাল থেকে আজ সকাল পর্যন্ত রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের কিং ছিনাই, জয়কুমার ও নামা জয়কুমার গ্রামের কমপক্ষে ১০টি পরিবার ধরলা নদীর ভাঙনের শিকার হয়ে বাঁধের সড়কে আশ্রয় নিয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে জয়কুমার আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ কিং ছিনাই গ্রামের প্রায় তিন শতাধিক পরিবার। একই উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের কালীরহাট ঘাট এলাকায় তিস্তার ভাঙনে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাজার ঝুঁকিতে আছে। গত এক সপ্তাহে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে রৌমারী উপজেলার চর শৈলমারী এবং বন্দবেড় ইউনিয়নের ৫০টি বাড়ি ও প্রায় ৩০ একর ফসলি জমি ভেঙে গেছে। উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের খুদিরকুঠি এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনঝুঁকিতে আছে খুদিরকুঠি উচ্চবিদ্যালয় ও বাজার। চিলমারী উপজেলায় কাচকোল এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনঝুঁকিতে আছে ডান তীর রক্ষা বাঁধ।
এই মুহূর্তে জেলায় পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন তীব্র আকারে দেখা দিয়েছে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, কুড়িগ্রামে উজানের ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যার্তদের উদ্ধারের জন্য চারটি স্পিডবোট প্রস্তুত আছে। বন্যার্তদের জন্য নগদ ১২ লাখ ৩৬ হাজার টাকা ও ২৫১ মেট্রিক টন চাল প্রস্তুত আছে।