পরিকল্পিত, পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকর, উন্নত স্মার্ট খুলনা গড়ার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক ৪০ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।
মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুর ১২টায় খুলনা প্রেসক্লাবে এই ইশতেহার ঘোষণা করা হয়।
হোল্ডিং ট্যাক্স না বাড়িয়ে সেবার মান বৃদ্ধি, কেসিসিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ, জলাবদ্ধতা দূরীকরণে বিশেষ ব্যবস্থা, মাদকমুক্ত নগর গড়া, শিশুদের সাঁতার শেখানোর বিশেষ উদ্যোগ, মহানগরী সম্প্রসারণের উদ্যোগসহ ৪০ দফা ইশতেহার ঘোষণা করছেন তিনি।
ইশতেহার ঘোষণার আগে গত পাঁচ বছরে বাস্তবায়ন করা উন্নয়ন প্রকল্পের বর্ণনা দেন তালুকদার আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, “বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে দেশের সব কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। যা প্রায় তিন বছর স্থায়ী ছিল। সে কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যথাসময়ে বিশাল এ কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। ফলে নগরবাসীকে হয়তো কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত এবং অনাকাঙ্ক্ষিত এ বিলম্বের জন্য নগরবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে চলমান উন্নয়নকাজ সমাপ্ত হলে খুলনা আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত একটি স্বাস্থ্যকর নগরীতে পরিণত হবে ইনশা আল্লাহ।”
তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, “আগামী ১২ জুন খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী হিসেবে আমি নতুন প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার নিয়ে আমার নির্বাচনী ইশতেহার তুলে ধরছি। কেসিসিকে ঘিরে আমার নতুন চিন্তাভাবনা ও পরিকল্পনা আপনারা আন্তরিকভাবে গ্রহণ করবেন বলে প্রত্যাশা করি।”
তালুকদার আব্দুল খালেকের ৪০ দফা ইশতেহারের প্রথমেই রয়েছে পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও পরিবেশবান্ধব খুলনা। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি নির্মাণ এবং নগর পরিকল্পনায় সবুজকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। সবুজ খুলনা গড়ে তুলতে এলাকাভিত্তিক পরিকল্পিত বনায়ন করা হবে। বাড়িভিত্তিক সবুজায়ন উৎসাহিত করা হবে। নগর পরিকল্পনায় পরিবেশকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে। নগরায়ণ হবে পরিবেশবান্ধব। জমি, বায়ু, শব্দদূষণের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়া হবে।
ইশতেহারে দ্বিতীয় দফায় নগরীতে পার্ক-উদ্যান নির্মাণ ও বনায়ন সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি দেন তালুকদার আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, বর্তমানে নগরীতে বিদ্যমান পার্ক ও উদ্যানগুলোর প্রয়োজনীয় সংস্কার ও উন্নয়ন করা হবে। এ ছাড়া উন্মুক্ত সুবিধাজনক স্থানে একটি বড় পার্ক, লেডিস পার্ক ও ২টি শিশুপার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং নদীসংলগ্ন স্থানে ভ্রমণের জন্য ‘ওয়াকওয়ে’ নির্মাণ করা হবে।
নগরীর দক্ষিণ প্রান্তে উপযুক্ত স্থানে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে বনায়ন সৃষ্টি করে পরিবেশের উন্নয়ন ঘটানো হবে। এ ছাড়া ময়ূর নদীসহ নগরীর ২২টি খাল খনন ও সংস্কার করে এর পাশে বনায়নের মাধ্যমে মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে।
ইশতেহারে অন্যান্য প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে জলাবদ্ধতা দূরীকরণের বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ড্রেন পরিস্কার, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উদ্যোগ, বৃক্ষ পরিচর্যা ও সংরক্ষণ, স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়নে ও নিরাপদ স্বাস্থ্যকর খুলনা, সুলভ মূল্যের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা, সূর্যোদয়ের আগেই পরিছন্নতা কার্যক্রম, মাদকমুক্ত নগর গড়ে তোলা, সড়কে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, পথচারীবান্ধব ফুটপাত, মানবিক উন্নয়ন কার্যক্রম, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান উপযোগী নগরী গড়ে তোলা, সিভিক সেন্টার গড়ে তোলা, অনুদান তহবিল চালু, কবরস্থান ও শ্মশান ঘাটের উন্নয়ন প্রভৃতি।
ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক ও এস এম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পারভীন জাহান কল্পনা, কেসিসি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক কাজী আমিনুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা এম ডি এ বাবুল রানা, এডভোকেট সুজিত কুমার অধিকারী, সাবেক সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, আশরাফুল ইসলাম, শহিদুল হক মিন্টু, মুন্সী মাহাবুবুল আলম সোহাগ, অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, রুনু রেজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।