সরকার নিজেদের আখের গোছাতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
শনিবার (২৭ জানুয়ারী) বিকেলে কাজীর দেউরী নুর আহমদ সড়কে বিএনপির কালো পতাকা মিছিল পূর্ববর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, “এই তথাকথিত নির্বাচনী খেলার আগে অল্প কিছুদিনের মধ্যে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অন্তত ১৫শর বেশি নেতাকর্মীকে সাজা দেওয়া হয়েছে। অন্যায়ভাবে তাদের দণ্ড দেওয়া হয়েছে। আইনমন্ত্রী বলেন, এটা নাকি কাকতালীয়। ওনারা ইচ্ছে করে করেন নাই। এতদিন সাজা হয় নাই, ঠিক নির্বাচনের আগের রাত পর্যন্ত আদালত বসিয়ে শত শত নেতাকর্মীর সাজা দেওয়া হয়েছে। এটি কাকতালীয় মনে হয় আপনাদের? এটি আমাদের ভয় দেখানোর জন্য করা হয়েছে। আমরা ভয় পাইনি। ওটাতো ছোট জেল, এই সরকার গোটা বাংলাদেশকে কারাগার বানিয়ে রেখেছে। বিএনপির কোনো কর্মী ওই ছোট কারগারকে ভয় পায় না।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “নির্বাচনের দিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ভোট পড়েছে ২৮ শতাংশ। পাশে থেকে একজন বললেন, না স্যার ৪০ শতাংশ। পরে তিনি বললেন, ৪০ শতাংশ। প্রতিনিধিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি একবার বললেন ২৮ আবার বললেন ৪০, ব্যাপারটা কী?’ তখন তিনি বলেন, ‘আমিতো ২টার দিকে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, বুঝতে পারি নাই, পরে সহকর্মীরা মনে করিয়ে দিয়েছেন’। ভাবেন একবার, দেশে একটা জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘুমাচ্ছে। এটা স্বাভাবিক। ফলাফল তো ঠিক করাই আছে, কোন কেন্দ্রে কে কত ভোট পাবে, বিরোধীদল নির্বাচন করে নাই, নির্বাচন কমিশনার ঘুমাইতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “ভোট ডাকাত আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে জনগণের কোনো মূল্য নেই। তাই তারা জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা করছে না। নিজেদের আখের গোছানোর জন্য সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করে জনগণকে বিভীষিকাময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। সাধারণ মানুষ আজ পরিবার পরিজন নিয়ে দিশাহারা। জনগণের কোনো মূল্য আওয়ামী লীগের কাছে নেই, কারণ তারা ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছে।”
নজরুল ইসলাম খান বলেন, “নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার দাবি যেন আদায় করতে না পারি তার জন্য আজকে মিথ্যা বানোয়াট একটি মামলায় আপোষহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দীর্ঘদিন ধরে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। কারণ আওয়ামী লীগ জানে, বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তার কাছে তাদের অন্যায় অত্যাচার টিকবে না। কারণ জিয়া পরিবারের জনপ্রিয়তাকে তারা ভয় পায়।”
দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি ও অবৈধ সংসদ বাতিলের এক দফা দাবিতে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি যৌথভাবে কেন্দ্র ঘোষিত এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।