চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদের বাড়ি ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করা হয়েছে।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গার নূরপুরের একটি সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা। সাইনবোর্ডটিতে ‘তারেক মাসুদের বাড়ি’ সংবলিত লেখা ছিল। এ ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর গত ১৩ সেপ্টেম্বর স্থানীয় প্রশাসন ভাঙা সাইনবোর্ডটি পুনর্নির্মাণ করে দেয়।
তবে সাইনবোর্ড ভাঙার পর থেকে তারেক মাসুদের পরিবারের মাঝে অনেকটা নিরাপত্তাহীনতা দেখা দেয়। পরে এ ঘটনায় তারেক মাসুদের গ্রামের বাড়ি ও তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা চেয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তারেক মাসুদের ভাই হাবিবুর রহমান মাসুদ।
ওসি জিয়ারুল ইসলাম বলেন, “সম্প্রতি তারেক মাসুদের বাড়ির সাইনবোর্ডটি ভাঙার ঘটনায় তার ভাই হাবিবুর রহমান মাসুদ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। জিডিতে তিনি তাদের বাড়ি ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়েছেন। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি এবং সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে তৎপর রয়েছি।”
এ বিষয়ে তারেক মাসুদের ভাই হাবিবুর রহমান মাসুদ বলেন, “আমাদের বাড়ি ও পরিবার নিয়ে একটু দুশ্চিন্তায় আছি। কারণ কয়েক দিন আগে আমাদের বাড়ির পাশের একটি সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। আমাদের সঙ্গে বাড়ির পাশের একটি পরিবারের জায়গাজমি নিয়েও ঝামেলা রয়েছে। এ ছাড়া এলাকায় অনেক শত্রু রয়েছে আমাদের। এসব কারণে আমাদের বাড়ি ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি জিডি করা হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্রকার প্রয়াত তারেক মাসুদ ১৯৫৬ সালের ৬ ডিসেম্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গার নূরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হওয়ার পরই তিনি চলচ্চিত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। দেশে তিনিই প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র আন্দোলনের সূচনা করেন।
২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা নামক স্থানে বিপরীতমুখী চুয়াডাঙ্গা এক্সপ্রেসের একটি বাসের সঙ্গে তারেক মাসুদ ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মিশুক মুনীরকে বহনকারী মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন। ঘটনার সময় তারা ‘কাগজের ফুল’ সিনেমার শুটিংয়ের লোকেশন দেখে ঢাকায় ফিরছিলেন। ‘মুক্তির গান’, ‘মাটির ময়না’, ‘আদম সুরত’, ‘রানওয়ে’সহ বেশ কিছু সাড়া জাগানো চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন তারেক মাসুদ।
তারেক মাসুদ ভাঙ্গার নূরপুর গ্রামের মসিউর রহমান মাসুদ-নূরুন্নাহার দম্পতির ছেলে। তার বাবা ভাঙ্গা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তিনিই (তারেক) সবার বড়।