টাঙ্গাইলের ধনবাড়ির মেয়ে মিম আক্তার সমকামী প্রেমের টানে ছুটে এসেছে সরিষাবাড়ীর উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের হাটবাড়ি গ্রামের আদুরি বাড়িতে। এতে বিপদে পড়ে যান অভিভাবকেরা। মিম আক্তার আদুরি ও আরিয়ান ইসলাম মিম নামের দুই মেয়ে একে অপরকে বিয়ের কথাও জানায় তারা। এ দুই মেয়ের সমকামী বিয়ে নিয়ে এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হলে সমকামী বিয়ের ঘটনায় দুই মেয়েসহ তাদের দুই সহযোগীকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ডোয়াইল হাটবাড়ী গ্রামের দুদু মিয়ার মেয়ে মিম আক্তার আদুরি (১৫) ও টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলা পাঁচনখালী গ্রামের রয়েজ আলীর মেয়ে আরিয়ান ইসলাম মিম (১৫) ডোয়াইল ইউনিয়নের কুঠিরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তিন বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয়।
তারা দুজনেই দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ অবস্থায় তারা তিন দিন আগে ঢাকায় চলে যায়। সেখানে গিয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ধার্য করে বিবাহের অঙ্গীকারনামা লেখে। পরে তাদের পরিবারের লোকজন সংবাদ পেয়ে ঢাকার মহাখালী ডোয়াইলের হাটবাড়ীতে নিয়ে আসেন। সঙ্গে তাদের দুই সহযোগী আয়াত আক্তার (১৭) ও রফিক ইসলাম (১৮) নামের দুজনকেও নিয়ে আসা হয়।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে ডোয়াইল ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্থানীয়রা বৈঠক করেন। সালিস বৈঠকে ওই মেয়েদের কথাবার্তায় তাদের সমকামী বলে সন্দেহ হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের পুলিশে সোপর্দ করেন।
এদিকে বুধবার দুপুরে সরিষাবাড়ী উপজেলার ইউনিয়নের হাটবাড়ি গ্রামের দুদু মিয়ার বাড়িতে ডোয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপনের নেতৃত্বে সমকামীর বিয়ের খবরে দুই সমকামী কিশোরীদের দেখতে ভিড় জমান এলাকার লোকজন।
মিম আক্তার আদুরির বাবা দুদু মিয়া জানান, অপর মেয়েটি তার মেয়ের বান্ধবী। মাঝেমধ্যে সে এখানে বেড়াতে আসত। তিন দিন আগে অপর মেয়েটি তার মেয়েকে ফুঁসলিয়ে মহাখালীতে নিয়ে যায়।
কিন্তু মিম আক্তার আদুরি ও আরিয়ান ইসলাম মিম বলেন ভিন্ন কথা। তারা সাফ জানিয়ে দেয়, তারা একে-অপরকে খুব ভালোবাসে। তাই তারা বিয়ে করেছে। তিন বছর আগে তাদের সম্পর্ক হয়। তাদের উভয়ের সম্মতিক্রমে বিয়ে হয়েছে। তারা একজন আরেকজনকে ছাড়তে পারবে না।
ডোয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপন বলেন, “কীভাবে মেয়ের সঙ্গে মেয়ের বিবাহ হয়। এটা সত্যিই একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। ওই মেয়েদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি গোলমেল মনে হয়। পরে তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এ সময় তাদের অপর দুই মেয়ে সহযোগী পুরান ঢাকার ১১ নম্বর রোডের রফিক মিয়ার মেয়ে আয়াত (১৯) বান্ধবী রাফিন ইসলাম (১৯) সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডে কর্মরত রয়েছেন বলেও জানান। তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।”
সরিষাবাড়ী থানার ওসি মহব্বত কবীর জানান, এ বিষয়ে চারজনকে থানায় আনা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সময়ে তাদের পরিবারের লোকজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।