চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে হত্যাকাণ্ডের শিকার আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের জানাজায় মানুষের ঢল নেমেছে।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রথম জানাজা আদালত প্রাঙ্গণে এবং সাড়ে ১১টার দিকে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
বিকেলে তার গ্রামের বাড়ি লোহাগাড়ায় আরেকটি জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার কথা রয়েছে।
জানা যায়, দু`পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় মঙ্গলবার রাত থেকে আজ বুধবার বেলা ১১টা পর্যন্ত পুলিশ নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন এলাকা থেকে মোট ৩০ জনকে আটক করা হয়।
অন্যদিকে, সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার প্রতিবাদে আজ বুধবার চট্টগ্রাম আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন আইনজীবীরা। মঙ্গলবার জেলা আইনজীবী সমিতির জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সাইফুল ইসলাম আলিফের প্রথম জানাজায় আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ঢল নামে। এ সময় তারা সাইফুল হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি করেন।
এ ছাড়া, দ্বিতীয় জানাজায় অংশগ্রহণ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং নাগরিক কমিটির সদস্য ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম।
নিহত সাইফুল ইসলাম লোহাগাড়ার চুনতি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) ছিলেন। ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন সাইফুল। পরে তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবেও নিবন্ধন পান।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা ও আইনজীবী খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা ও আইনজীবী খুনে মামলারও প্রস্তুতি চলছে।
জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করা হয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। এসময় প্রিজন ভ্যান আটকে দেয়া হয়। তারা এসময় বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। আড়াই ঘণ্টা পর বেলা ৩টার দিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় পুলিশের সঙ্গে তার বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ বাধে। পরে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের মূল ফটকের সামনে রঙ্গম সিনেমা হল সংলগ্ন এলাকায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সংঘর্ষে ১০ পুলিশ সদস্যসহ আহত হন অন্তত ৩০ জন। পরে চট্টগ্রামে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা ও আইনজীবী হত্যার অভিযোগে ৩০ জনকে আটক করে যৌথ বাহিনী।
এর আগে গত সোমবার বিকালে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে চট্টগ্রামে আনা হয়।