রংপুরে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি চক্রের ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ৩ শিক্ষক ও ১১ পরীক্ষার্থী রয়েছেন। এসময় বেশ কিছু ডিভাইস ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় রংপুর নগরীর ডিবি কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মনিরুজ্জামান এ বিষয়টি জানান।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বিটু এক্স ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষার্থীর প্রশ্নপত্রের উত্তর প্রদানের চুক্তি করা হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী প্রস্তুতির প্রাক্কালে পরীক্ষার আগের রাতে ও সকালে রংপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন রংপুরের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ১১ জন পরীক্ষার্থী এবং পাঁচজন ডিভাইস জালিয়াতি সিন্ডিকেটের সদস্য।
গ্রেপ্তার পরীক্ষার্থীদের মধ্যে আটজন নারী রয়েছেন, যাদের পরীক্ষা শুরুর আগেই পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে ডিভাইসসহ আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছে থেকে ১১টি ডিভাইস, ৮০টি ফোন ও অ্যাডমিট কার্ড উদ্ধার করা হয়।
ডিভাইস জালিয়াতি সিন্ডিকেটের সদস্যদের আটক অভিযানে মোট চারটি দল কাজ করে জানায় পুলিশ।
এদিকে রংপুর বিভাগে পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে রংপুর ১৯, দিনাজপুর ১০, লালমনিরহাট ১৩, নীলফামারীর ৩ জন রয়েছে। এ ছাড়া ১১ ডিভাইস ও ৮০ টি মোবাইল জব্দ করা হয়।
পুলিশ কমিশনার মনিরুজ্জামান বলেন, “সরকার সব নিয়োগ পরীক্ষায় সর্বাত্মক সচেতন। তারপরও একটি অসাধু চক্র ডিজিটাল ডিভাইস অপব্যবহার করে এই জালিয়াতি কাজের সাথে জড়িত। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ডিভাইস জালিয়াতি চক্রটিকে পরীক্ষার আগে রাতে, সকালে ও পরীক্ষা শুরুর আগেই কেন্দ্র থেকে আটক করা হয়েছে। তাদের আটকের ফলে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে পারেনি চক্রটি। এই ঘটনায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি নিশ্চিত করেন।”
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (ডিবি) কাজী মুত্তাকী ইবনু মিনান, ডিসি ক্রাইম আবু মারুফ হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর রংপুর বিভাগের উপ-পরিচালক মুজাহিদুল ইসলাসহ রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর রংপুর বিভাগের উপ-পরিচালক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পরীক্ষা বাতিল হবে কি না এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ের। তাছাড়া রংপুর বিভাগীয় কমিশনার বিষয়টি তত্ত্বাবধান করছেন।