• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

গাজী টায়ার কারখানার ৪ ও ৫তলা ভেঙে পড়েছে তিনতলায়


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২৪, ০৩:১৯ পিএম
গাজী টায়ার কারখানার ৪ ও ৫তলা ভেঙে পড়েছে তিনতলায়

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গাজী টায়ার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন পরিদর্শন করেছে বুয়েট ও ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞ দল। 

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আগুনে পুড়ে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনে উদ্ধার অভিযান করাটা ঝুঁকিপূর্ণ।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকালে রূপগঞ্জে গাজী টায়ার আগুনে পুরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি পরিদর্শন করেন বুয়েট সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের অধ্যাপক রাকিব আহসান, ফায়ার সার্ভিস ঢাকা বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ারুল হকসহ একটি বিশেষজ্ঞ দল।

ভবন পরিদর্শন শেষে তারা জানান, ভবনের ওপরের তিনটি ফ্লোরের ছাদের অংশ ভেঙে পড়েছে। তাই উদ্ধার অভিযান করা ঝুঁকিপূর্ণ। দীর্ঘসময় আগুন জ্বলায় চার, পাঁচ ও ছয়তলার ছাদ ভেঙে গেছে। ভবনে বিম বাঁকা হয়ে গেছে। আগুনে পুড়ে ভনের ছাদের রড বেরিয়ে গেছে। এ অবস্থায় অভিযান করতে গেলে ভবনটি ভেঙে পড়তে পারে। এসময় কোনো মরদেহ চোখে পড়েনি বলে জানায় তারা।

ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। 

বুয়েট সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের অধ্যাপক রাকিব আহসান বলেন, “রাতে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে আমাদের বিভাগের প্রধানের সঙ্গে ডিসি সাহেব কথা বলেন। ওই কথার প্রেক্ষিতে এই ভবনের কাঠামোগত অবস্থা দেখতে আমি আজ সকালে এখানে এসেছি যে, এখানে আসলে উদ্ধার অভিযান চালানো সম্ভব কি না। আমরা ভবনের চারপাশ থেকে যতদূর সম্ভব দেখেছি। গতকাল ফায়ার সার্ভিস ড্রোন দিয়ে কিছু ছবি নিয়েছে সেগুলোও আমরা দেখেছি। সেগুলো পর্যালোচনা করে যেটি মনে হয়েছে, আগুনটা আসলে দীর্ঘ সময় ধরে ছিল, তিন দিনের মতো জ্বলেছে। এখানে অনেক কেমিক্যাল ছিল। যার ফলে এখানে তাপও অনেক বেশি তৈরি হয়েছে, যেটার চিহ্ন আসলে স্ট্রাকচারটা দেখলেই বোঝা যায়। এখানে কনক্রিটগুলো শুধু পুড়ে যায়নি, পুড়ে ভেঙে গেছে, রডগুলো বের হয়ে গেছে। এইটা ছয় তলা ভবন। এখানকার পাঁচতলা এবং চারতলা ফ্লোর ভেঙে তিনতলার মধ্যে এসে পড়েছে এবং সেই ভাঙা অংশগুলোর ওজন অনেক বেশি। ফলে তিনতলাও বেঁকে গেছে। কলামগুলো বেশিরভাগই ফেটে গেছে।”

রাকিব আহসান আরও বলেন, “ওপর তলাগুলোতে বেশি সময় ধরে আগুল জ্বলাতে ওইদিকে ক্ষয়ক্ষতি বেশি এবং সেটিই সমস্যা। কারণ নিচের দিকে যদি উদ্ধার অভিযান পরিচালনার চেষ্টা করা হয়, তাহলে ওপরের দিকের অংশ ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এইসব বিবেচনায় ভেতরে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করাটা খুবই বিপজ্জনক। এইটা পরবর্তীতে ভেঙে ফেলার পরিকল্পনাটাও অত্যন্ত পরিকল্পনামাফিক করতে হবে, যাতে ভেঙে ফেলার সময়ও কোনো দুর্ঘটনার সৃষ্টি না হয়।”  

মরদেহ আছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমাদের সাদা চোখে এরকম কিছু চোখে পড়েনি। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এ ব্যাপারে প্রশিক্ষিত, তারা ভালো বলতে পারবেন।’

ঢাকা বিভাগের ফায়ার সার্ভিস সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ারুল হক বলেন, “জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটা টিম গঠন করা হয়েছে, যেখানে জেলা প্রশাসকের লোকজন আছেন।”

আনোয়ারুল হক বলেন, “আমরা টার্নটেবল র‍্যাডার দিয়ে ভবনের ছাদের ওপরের অংশ দেখেছি। ছয়তলা, পাঁচতলা সবগুলো অংশ দেখেছি। এ ছাড়া আমরা ড্রোনও ব্যবহার করেছি। আমাদের সদস্যরা চারতলায় সিঁড়ি দিয়েও উঠে দেখেছেন। এখনও পর্যন্ত আমরা যা দেখেছি, তাতে কোনো ভিকটিম চোখে পড়েনি। ওইখানের অবস্থা দেখে আমাদের মনে হয়েছে, ওইখানে সার্চ অ্যান্ড রিসকিউ করার সেই সুযোগ নেই।”

এক প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি এখানে একটা বেজমেন্ট আছে। সেখানে আমরা একটা টিম পাঠাব। সেখানে কোনো লোক আটকা পড়েছে কি না সেটা দেখব আমরা। এটা আজকেই আমরা দেখব।”

Link copied!