আল্লাহর আইন বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে দেশবাসীকে জামায়াত ইসলামে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আয়োজিত শহরের লিল্লাহ মসজিদ মাঠে শ্রমিক গণজমায়াতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, “৭১ সালে মানুষ তিনটি জিনিসের স্বাধীনতা চেয়েছিল। তা হলো কথা বলার স্বাধীনতা, ভোটের স্বাধীনতা ও ভাতের নিশ্চয়তা। কিন্তু পতিত আওয়ামী লীগ সরকার ও খুনি হাসিনা মানুষের মৌলিক সে তিনটি অধিকার কেঁড়ে নিয়েছিল। মানুষের অধিকার কেঁড়ে নেওয়ায় মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। তখন তারা হাজার হাজার মানুষকে গুম-খুন ও হত্যা করেছে। শেষে ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে খুনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।”
তিনি বলেন, “যে স্বৈরাচার একবার পালিয়ে গেছে সে স্বৈরাচার আর বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারবে না। এখন বাংলাদেশে শান্তি ফেরাতে হলে আল্লার আইন চালু করতে হবে। একমাত্র আল্লার আইন মেনে চললেই দেশে শান্তি ফিরে আসবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী আল্লাহর আইন মেনে চলে, জামায়াতে ইসলামীকে ভোট দিলে তারা সংসদে আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করবে।” তাই আল্লার আইন বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে দেশবাসীকে জামায়াতে ইসলামীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
জামায়াতের এই আমির বলেন, “৫ আগস্ট ছাত-জনতার আন্দোলনে যে বিপ্লব হয়ে হয়েছে, তাতে এই দেশের শ্রমিকদের অবদান কম নয়। শ্রমিকরাও আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ায় বিপ্লব তরান্বিত হয়েছে। আমাদের দেশে বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় শ্রমিকদের শ্রমের মূল্যায়ল করা হয়নি। এতে করে শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে অনেক কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। শ্রমিকদের যদি আমরা সঠিক মর্যাদা দিতে পারি তাহলে দেশের চেহারা পরিবর্তন হয়ে যাবে।”
তিনি শ্রমিকদের যথাযথ সম্মান দেওয়ার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট জোর দাবি জানান।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান আরও বলেন, “স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিগত সাড়ে পনের বছর আওয়ামী লীগ ভোট ডাকাতি, টাকা পাচার, গুম-খুন ও উন্নয়নের নামে লুটপাটের ইতিহাস দৃষ্টি করেছে। দেশের মানুষ আওয়ামী ফ্যাসিস্টকে যেমনি চায় না, তেমনি নতুন কেউ ফ্যাসিবাদী কায়দায় দেশ পরিচালনায় আসুক এটাও চায় না। দেশের মানুষ সত্যিকারের একটি পরিবর্তন চায়। যেখানে আত্মমর্যাদা ও নিরাপত্তা নিয়ে বসবাস করতে পারবে। জামায়াতে ইসলামী এ ধরনের একটি দেশ গড়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সর্বক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।” তিনি দেশবাসীকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে জামায়াতে ইসলামীর পাশে থাকার জন্য আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মমিম উল্যাহ পাটওয়ারীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাস্টার মমিনুল হকের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর এস ইউ এম রুহুল আমিন ভূঁইয়া, নায়েবে আমীর অ্যাডভোকেট নজির আহম্মদ, এ আর হাফিজ উল্লাহ, সেক্রেটারি মাওলানা ফারুক হোসাইন নুরনবী প্রমুখ।