কোথাও টং দোকান, কোথাও মালামালের স্তুপ, কোথাও ড্রেনের ওপর পড়ে আছে ভাঙা স্ল্যাভ। আবার কোনো কোনো স্থানে শুধু ফুটপাত নয়, সড়কের ওপরও মালামাল রাখা হয়েছে। এমনকি গাড়ি পার্কিং করেও রাখা হয়েছে অনেক স্থানে।
ফেনী শহরের ব্যস্ততম শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক দিয়ে চলাচল করলে প্রতিনিয়ত এমন চিত্র দেখা যায়। সড়কের পাশ দিয়ে চলাচলের জন্য ফুটপাত থাকলেও ব্যবহার করতে না পারায় ক্ষুব্ধ পথচারীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের ট্রাংক রোডের খেজুর চত্ত্বর সংলগ্ন স্থান থেকে মহিপাল পর্যন্ত শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক। আগে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করলে শুরুতেই চোখে পড়ত শহীদুল্লাহ কায়সারের ছবি ও জীবনবৃত্তান্ত সংবলিত নামফলকটি। তবে এখন আর সেটি দেখা যায় না। বিভিন্ন পোস্টার-ফেস্টুনে ঢাকা পড়ে আছে ফেনীর বরেণ্য এ বুদ্ধিজীবীর নামফলক। সড়কের এক পাশে এখনো ফুটপাত নির্মিত হয়নি। অপর পাশে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে ফুটপাত নির্মাণ করা হলেও এখন সেটা ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পথচারীরা। নিকটস্থ দোকানীরা যেমন মালামাল রেখে ফুটপাতের ওপর দোকান সম্প্রসারণ করে রেখেছেন, তেমনিভাবে অবৈধভাবে টং দোকান গড়ে উঠেছে অসংখ্য।
ওই এলাকার বাসিন্দা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবদুল মোতালেব জানান, দোকানগুলো তাদের মালিকানায় হলেও ফুটপাত ও সড়কের ওপর মালামাল রাখায় নিজেদেরই ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কখনো কখনো পথচারীদের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।
আরেকটু সামনে শহর পুলিশ ফাঁড়ি। ফাঁড়ির দেওয়াল ঘেঁষে রয়েছে একটি চায়ের টং দোকান। এই দোকানে বসে পুলিশ কর্মকর্তাদের সময় কাটাতে দেখা যায়। ওই দোকানের পাশে ফায়ার সার্ভিসের কার্যালয়ের সামনে ফুটপাতে আরেকটি দোকান রয়েছে।
এক নারী পথচারী জানান, ফুটপাতে চলাচল করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। একদিকে ফুটপাত খালি না থাকায় হাঁটা-চলা করা কঠিন। অনেক স্থানে ভেঙে যাওয়া স্ল্যাভ ঠিক না করায় বাচ্চাদের নিয়ে চলাচল করা যায় না।
সম্প্রতি স্টার লাইন বাস টার্মিনালের বিপরীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সীমানা প্রাচীরের সামনে ফুটপাতে গড়ে উঠেছে একাধিক দোকান। এর আগে পাশের ওয়াপদা মাঠের প্রবেশমুখে রয়েছে তিনটি অস্থায়ী দোকান। এখানকার দোকানীরা জানান, তারা গরিব মানুষ। জায়গাটি ফাঁকা পড়েছিল। তাই অস্থায়ী দোকান করেছেন। এখানকার আয়ে তাদের সংসার চলে।
ফুটপাত ও সড়ক দখল করে অস্থায়ী দোকান বসানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন ফেনী পৌরসভার কাউন্সিলর গোলাম মেহেদী আলম চৌধুরী রুবেল। তিনি জানান, এমজিএসপি প্রকল্প থেকে বরাদ্দ পেলে শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কের দুই পাশে ১০ ফুট করে ড্রেন নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সড়কের চিত্র বদলে যাবে।