• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নোয়াখালীতে কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি


নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৪, ০৪:৫৪ পিএম
নোয়াখালীতে কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি

নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গত দুদিন বৃষ্টি না হওয়ায় প্রায় চার ইঞ্চি পানি কমেছে। তবে এখনো ঘরবাড়িতে ফিরতে পারছেন না বন্যা দুর্গতরা। শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত বিভিন্নস্থানে খোঁজ নিয়ে এ তথ্য জানা গেছে।

জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আকাশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় দ্রুতই বন্যা পরিস্থিতি কেটে যাবে বলে আমরা আশা করছি। আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও ভারী বৃষ্টিপাতের কোনো আভাস নেই।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সী আমির ফয়সাল বলেন, কোম্পানীগঞ্জে মুছাপুর ২৩ ভেন্ট রেগুলেটরের সবগুলো গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণ পানি সাগরে নিষ্কাশন হচ্ছে। জেলা শহর ও আশপাশের উপজেলায় ৩-৪ ইঞ্চি পানি কমেছে। এভাবে কমতে থাকলে ৩-৪ দিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

এদিকে, ভারী বর্ষণ ও ফেনী নদীর পানিতে নোয়াখালীর ৮ উপজেলার ৮৭ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে বিভিন্ন উপজেলা পানিবন্দি হয়ে পড়েন অন্তত ২০ লাখ মানুষ। ৫০২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেন লক্ষাধিক মানুষ। এসব আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে রান্নার ব্যবস্থা না থাকায় খাবারসহ বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

সেনবাগ উপজেলার বাসিন্দা ইমরান হোসেন বলেন, “বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা আছেন। ঘরের ভেতর পানি উঠেছে। বাবা-মাকে বারবার বুঝিয়ে এতদিন আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে পারিনি। শুক্রবার সকালে তারা নিজ থেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন। কারণ আমাদের ঘরের ভেতর কোমরসমান পানি।”

বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের কুসুম আক্তার বলেন, “ঘরে পানি উঠায় অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে আরেকজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।”

সেনবাগ ও বেগমগঞ্জ উপজেলার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ফেনী থেকে তাদের এলাকায় পানি আসছে। এ কারণে নোয়াখালীতে বৃষ্টি কমলেও বন্যা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী বলেন, “বৃষ্টিপাত, জোয়ার ও ফেনী থেকে আসা পানির চাপ- সবকিছু মিলিয়ে কোম্পানীগঞ্জ মোটামুটি ভালো আছে। ভাটা শুরু হয়েছে। তবে কোম্পানীগঞ্জের প্রায় সবাই এখনো পানিবন্দী।” আশ্রয়কেন্দ্রসহ আশপাশের সব পানিবন্দী মানুষের খোঁজ রাখতে বিত্তবানদের আহ্বান জানানা তিনি।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, “জেলার ৮২৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ। এছাড়া বন্যায় এ পর্যন্ত তিনজন নিহত হয়েছেন। অনেকে পানিবন্দী হয়ে নিজের বসতবাড়িতে আছেন। আমরা সবার মাঝে সরকারি সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।” 

Link copied!