• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

লক্ষ্মীপুরে ধীরগতিতে নামছে বন্যার পানি


লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২৪, ০৬:৩৪ পিএম
লক্ষ্মীপুরে ধীরগতিতে নামছে বন্যার পানি

লক্ষ্মীপুরে বন্যাকবলিত এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে ধীরগতিতে পানি কমায় পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। বিভিন্ন সড়ক থেকে পানি কিছুটা কমলেও এখনো বাড়ি-ঘর তলিয়ে রয়েছে। যার কারণে দুর্ভোগ কমেনি বানভাসী মানুষের। জেলায় এখনো পানিবন্দী ১০ লাখেরও বেশি মানুষ।

এদিকে জেলার বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় এখনো ত্রাণ না পৌঁছানোয় সংকটে আছেন ওই এসব জায়গার মানুষ।

পৌর শহরের বাসিন্দা আবদুল হাই বলেন, “বুধবারের (২৮ আগস্ট) তুলনায় বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বাসা থেকে দুই থেকে তিন ইঞ্চি পানি কমেছে। কিন্তু সামনের যে সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছি, সেখান থেকে পানি একটুও নামেনি।”

এনামুল হক নামের অপর একজন বলেন, “গত ১৫ দিন ধরে পানিবন্দী। তবে অনেক দিন পর সূর্যের দেখা মিলেছে। রোদ উঠছে। জমে থাকা জামা-কাপড় শুকাতে পারছি। তবে যেভাবে পানি নামছে, এভাবেই ধীরগতিতে নামলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে সময় লাগবে।”

রশিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে আশ্রয় নেওয়া আলেয়া বেগম বলেন, “এক বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। সামান্য শুকানো খাবার ও ত্রাণ দেওয়া হয়। এটা দিয়ে চলে না।”

লক্ষ্মীপুরের ভয়াবহ এ বন্যায় জেলার পাঁচটি উপজেলার ৫৮টি ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভার প্রতিটি এলাকার মানুষ এখনো পানিবন্দী। প্লাবিত রয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। সরকারি হিসাবে পানিবন্দী রয়েছেন অন্তত ১০ লাখ মানুষ। ১৫০টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৪০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এসব মানুষের কেউ কেউ খাবার, ওষুধ, স্যালাইন ও বিশুদ্ধ পানির সংকটের কথা জানিয়েছেন। এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পানিবাহিত নানা রোগ।

এদিকে আশ্রয়কেন্দ্রে না আসা পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ আরও বেশি। কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর, আবার কোথাও গলাপানির নিচে তলিয়ে রয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। অনেকেই ত্রাণ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন প্রসূতি, শিশু ও বৃদ্ধরা।

সরজমিনে বানভাসীদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, “আমরা অনেক কষ্টে আছি, থাকার জায়গা নাই, টয়লেট নাই, খাটের এক অংশে কোনো মতে চেপে বসে আছি। সামান্য একটু জায়গায় কষ্ট করে ঘুমাই। এরপরেও কি ঘুম আসে? তোষক ভিজা, বালিশ ভিজা। পানির ওপর ঘুম আসে না। বলতে গেলে আসলে কোনো কিছুই নেই আমাদের। অবস্থা খুবই খারাপ।”

তারা আরও বলেন, “প্রায় ১৮ থেকে ২০ দিন পানিবন্দী রয়েছি। দীর্ঘসময় পানিবন্দী থাকায় চলাফেরা, রান্নাবান্না, খাওয়া-দাওয়া, পয়ঃনিষ্কাশন, সুপ্রেয় পানির অভাব, রোগবালাই এবং চরম অর্থ কষ্টে রয়েছি।”

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ-জামান বলেন, “বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। মেঘনার পানি বিপৎসীমার অনেক নিচে। ধীরগতিতে পানি নামছে। অনেক খালের বাঁধ কেটে দেওয়া হয়েছে। আশা করি খুব শিগগিরই বন্যার উন্নতি হবে।”

Link copied!