• ঢাকা
  • রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

রাঙামাটির আদালতে প্রথম ফাঁসির আদেশ


রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৪, ০৪:০৩ পিএম
রাঙামাটির আদালতে প্রথম ফাঁসির আদেশ
আদালতে আসামি অংবাচিং মারমা। ছবি : সংগৃহীত

রাঙামাটিতে  নয় বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা ও হত্যার অপরাধে অংবাচিং মারমা ওরফে বামং (৪৬) নামে এক ব্যক্তিকে অর্থদণ্ডসহ মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাঙামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল আদালতের বিচারক এ ই এম ইসমাইল হোসেন এ রায় দেন। 

আসামির মৃত্যু না হওয়া পর্ষন্ত তাকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেন বিচারক। রাঙামাটির জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এটাই প্রথম ফাঁসির আদেশ।

রায়ে বলা হয়, ২০১৯ সালে ২ ফেব্রুয়ারি কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের পূর্ব কোদালা এলাকায় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মিতালী মারমা বদ্দ পাড়ায় তার মামার বাসায় প্রাইভেট পড়তে যায়। এ সময় আসামি প্রাইভেট শিক্ষক অংবাচিং মারমা ওরফে বামং বাকি শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে ভিক্টিমকে আরো পড়ানোর অজুহাতে রেখে দেয়।

এক পর্যায়ে একা পেয়ে আসামি ধর্ষণ করতে চাইলে ভিক্টিম কান্নাকাটি ও চিৎকার করে। এতে আসামি ক্ষিপ্ত হয়ে ভিক্টিমের মুখ চেপে ধরে ও এক পর্যায়ে ভিক্টিমকে গলায় সূতালি ও কাপড়ের ব্যাগের ফিতা দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এর লাশ বস্তায় ভরে ঘরের মাচাং এর উপর তুলে রাখে। এতে ভিক্টিম বিকেলে বাসায় না যাওয়ায় তার বাবামা ও প্রতিবেশীরা খুঁজতে থাকে। পরে আসামির কাছে জানতে চাইলে তার আচরণ সন্দেহ হওয়ায় তার ওপর নজর রাখে।

পরে আসামি রাতের বেলায় বস্তায় করে লাশ নিয়ে বের হলে হাতেনাতে আটক করে পাড়াবাসী। এতে বস্তা খুলে ভিক্টিম মিতালী মারমার লাশ দেখতে পায়। এতে এলাকাবাসী ক্ষুদ্ধ হয়ে গণ পিটুনি দেয় ও পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ আসামি বামংকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে ভিক্টিমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষনের চেষ্টা, হত্যা ও লাশ গুমের চেষ্টায় মামলা দায়ের পর আদালতে তোলা হয়।

দীর্ঘ ছয় বছর মামলা চলার পর বৃহস্পতিবার চাঞ্চল্যকর চূড়ান্ত রায়ের মামলা রাঙামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল আদালতের বিচারক এ.ই. এম ইসমাইল হোসেনের আদালতে তোলা হয়। এতে আদালতের বিচারক উপস্থিত মামলার বাদী-বিবাদীদের উভয় পক্ষের সামনে মামলার আদেশ পড়ে শুনান। এতে যাবতীয় সাক্ষ্য প্রমানাদি সাপেক্ষে আদালতের বিচারক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের আসামী বামংকে দশ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং পঞ্চাশ হাজার টাকা ও পেনাল কোড ১৮৬০ এর ৩০২ ধারার অপরাধে দায়ে মত্যুদন্ড ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা ধার্য্য করেন। একই সাথে বিচারক আসামি মৃত্যু না হওয়া পর্ষন্ত তাকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. সাইফুল ইসলাম অভি এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘এ রায়ের ফলে রাষ্ট্র ও সমাজে নারী ও শিশু ভবিষ্যতে সমাজে আর কেউ আর এ ধরনের জঘন্য অপরাধ করার সাহস পাবে না।’

Link copied!