টাঙ্গাইলে রেল স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা কমিউটার ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রেলওয়ে বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনির কম্যান্ডেন্ট ও বিভাগীয় প্রকৌশলীকে নিয়ে এ তদন্ত কমিটির করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) রাত ৩টায় ঘারিন্দা রেল স্টেশনে টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
ঘারিন্দা স্টেশন মাস্টার তরিকুল ইসলাম জানান, ঘারিন্দা রেলস্টেশনে সিসি ক্যামেরা থাকলেও যে অংশে ট্রেনের বগিগুলোতে আগুন লেগেছে সেই অংশ সিসি ক্যামেরার আওতার বাইরে ছিল। বিষয়টি তদন্তের জন্য রেলওয়ের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রতিদিন সকাল ৭টায় টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বুধবার রাতে ট্রেনটি ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল স্টেশনে এসে অবস্থান করছিল। রাত তিনটার দিকে আন্তনগর পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি টাঙ্গাইল স্টেশনে প্রবেশ করে। কিছুক্ষণ পরই পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীরা পাশের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনে আগুন ও ধোঁয়া দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। এ সময় দ্রুত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে খবর দেওয়া হয়।
স্টেশনে কর্মরত রেলওয়ের কর্মী, রেলওয়ে পুলিশ সদস্য ও আনসার সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নেভাতে চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নেভান। এতে কমিউটার ট্রেনের দুটি বগি সম্পূর্ণ এবং আরেকটি বগি আংশিক পুড়েছে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইদ্রিস জানান, রাত তিনটার দিকে খবর পেয়ে স্টেশনে গিয়ে ট্রেনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। ট্রেনের ইঞ্জিনের কাছাকাছি দুটি বগি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ট্রেনের দুটি বগির ভেতরে আসনগুলো পুড়ে গেছে। অপর ট্রেনের একটি বগিতে আগুন লাগলেও ভেতরে পোড়েনি।
এদিকে ঘটনার পর থেকে রেলস্টেশনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। টহলে রয়েছে র্যাব ও পুলিশ।
রেলওয়ে পাকশী বিভাগের পরিচালক শাহ সুফী নূর মোহাম্মদ ও টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সারসহ র্যাব, আনসার ও রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার এই ঘটনাকে নাশকতা উল্লেখ করে বলেন, ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনাটি অবশ্যই নাশকতা। বিএনপিসহ অন্যান্য দল আন্দোলনের নামে দেশব্যাপী যে অঘটন ঘটাচ্ছে, এটি তারই অংশ বলেই ধারণা করছি।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি তদন্ত করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। অপরাধীদের চিহ্নিত করে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।
পাকশীর বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ জানান, ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি সার্বিক বিষয় দেখে বিস্তারিত জানাবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে নাশকতার উদ্দ্যেশ্যে এই ঘটনা ঘটিয়েছে কেউ। তদন্ত কমিটির করা হয়েছে রেলওয়ে বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনির কম্যান্ডেন্ট ও বিভাগীয় প্রকৌশলীকে নিয়ে।