সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমির জাল দলিল করে বিক্রির মামলায় এক বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত এবং তিন মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্তসহ ৮ মামলার আসামি রংপুর সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং তাজহাট মেট্রোপলিটন থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া আলম শিপলুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) রাতে নগরীর বিনোদপুর এলাকার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফুজ্জামান আরিফ জানান, ২৪৪/২২ এবং ১৮১/২২ দুই মামলার ওয়ারেন্ট থাকায় সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর জাকারিয়া আলম শিপলুকে নগরীর বিনোদপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এ ছাড়া তিনি একটি মামলার এক বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার আগমুহূর্তে কয়েকটি পুলিশ ভ্যান শিপলুর বাড়ি ঘেরাও করে রাখে। অভিযানের খবর পেয়ে কিছু লোক মুখে গামছা বেঁধে বাড়ির সামনে এসে নানা ধরনের স্লোগান দিয়ে অভিযান বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করে। রাত সাড়ে ৯টায় কাউন্সিলর শিপলু বাড়ির দোতলা থেকে নিচে নেমে এলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
অন্যদিকে কাউন্সিলর জাকারিয়া আলম শিপলুকে আটক ও হয়রানি করা হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকি দিয়েছে এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী শাফিউল ইসলাম শাফি পুলিশ দিয়ে জাকারিয়া আলম শিপলুকে হয়রানি করছেন, যা অন্যায় এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
জাকারিয়া আলম শিপলুর আইনজীবী মাহামুদুল হক সেলিম সাংবাদিকদের জানান, কাউন্সিলর শিপলুকে যে মামলায় কোতোয়ালি থানা-পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে এসেছে, সেই মামলা সম্পর্কে তিনি জানতেন না। এ মামলার চার্জশিটে কাউন্সিলরকে অভিযুক্ত করেছে পুলিশ। শনিবার (৮ এপ্রিল) আদালতে কাউন্সিলরের জামিন আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ দলীয় নেতাকর্মীদের ভিড় বাড়তে থাকে, সেই সঙ্গে পুলিশের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। এ সময় তুমুল উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কয়েক দফায় শিপলুর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু এলাকাবাসীর তোপের মুখে তারা ব্যর্থ হন। পরে সাড়ে রাত ৯টার দিকে জাকারিয়া আলম শিপলুকে তার ব্যক্তিগত একটি গাড়িতে করে কোতোয়ালি থানায় নেওয়া হয়।
শনিবার (১ এপ্রিল) যমুনা টেলিভিশনের ‘ক্রাইম সিন’ এ জাকারিয়া আলম শিপলু ও তার বাহিনীর জমি জালিয়াতি বিক্রি, জবরদখল ভাঙচুর কবরস্থানের জমি দখল থেকে পৃষ্ঠপোষকতা এবং সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে হলফ নামায় তথ্য গোপন করার বিষয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
ওই প্রতিবেদনের জেরে বুধবার (৫ এপ্রিল) ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও জাকারিয়া আলম শিপলু আদালতে হাজির হয়ে যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ করেসপনডেন্ট সরকার মাজহারুল মান্নানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।