নাটোরের লালপুরে সরিষা চাষে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও বিস্তৃত মাঠ হলুদ রঙে ভরে উঠেছে। যেদিকে চোখ যায় সেদিকে সবুজের মাঠজুড়ে হলুদ রঙের সরিষার ফুলের হাসি। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় এ অঞ্চলে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সরিষার চাষ। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার অধিক ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সরিষার চাষে খরচ ও পরিশ্রম দুটোই কম হওয়ায় অনেক কৃষক এই ফসল চাষে ঝুঁকছেন। সরিষা তোলার পর একই জমিতে আখের আবাদ হচ্ছে। আর এবার চলতি মৌসুমে ৭০৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ১০০ হেক্টর জমি বেশি চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৪ মেট্রিক টন।
সরেজমিনে উপজেলার পদ্মার চর, দুড়দুড়িয়া, কচুয়াসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের সমারোহ। ফুলে ফুলে ভরে গেছে সরিষার খেত।
ভেল্লাবাড়িয়া গ্রামের কৃষক ফজলুর রহমান জানান, পাট কাটার পর জমি কয়েক মাসের জন্য পরিত্যক্ত থাকে। ওই জমিতে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করেছেন। আর সরিষা চাষে তেমন খরচও নেই। শুধু জমি চাষের পর বীজ ছিটিয়ে দিতে হয়। তারপর গাছ বড় হলে দিতে হয় সেচ। সার বা কীটনাশক তেমন একটা দিতে হয় না। এ কারণে সরিষা চাষে অনেক লাভ।
বাওড়া গ্রামের হাফিজুল্লাহ ও কচুয়া গ্রামের আব্দুল করিম জানান, এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা। ফলন পাওয়া যায় ৫ থেকে ৭ মণ। প্রতিমণ সরিষার মূল্য এখন ৩ হাজার ২০০ টাকা থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। আবার সময় লাগে অল্প। এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। ইতোমধ্যে কোনো কোনো ক্ষেতে সরিষার দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর ৯৫ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষার চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তাই কৃষকরা উৎসাহিত হয়ে সরিষার ব্যাপক চাষাবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর সরিষার ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, সরিষার আবাদ বৃদ্ধি হলে তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়বে এবং তেলের আমদানিনির্ভরতা কমে যাবে।