• ঢাকা
  • সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩০, ৩০ রমজান ১৪৪৬

খাটিয়ার ওপর ১৬ ঘণ্টা পিতার মরদেহ, পুত্ররা ব্যস্ত সম্পত্তি ভাগাভাগিতে


যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৫, ১১:২৮ এএম
খাটিয়ার ওপর ১৬ ঘণ্টা পিতার মরদেহ,  পুত্ররা ব্যস্ত সম্পত্তি ভাগাভাগিতে
বাবার মরদেহ রেখে সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে সালিসে ব্যস্ত। ছবি: সংগৃহীত

খাটিয়ার ওপর ১৬ ঘন্টা পিতার মরদেহ রেখে সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে সালিসে ব্যস্ত ৯ সন্তান। সালিস শেষে ১৬ ঘণ্টা পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, মেম্বার ও এলাকাবাসীর হস্তক্ষেপে মরদেহের দাফন করা হয়। বুধবার (২৬ মার্চ) ভোর ৬টার দিকে মৃত্যু হলেও এদিন রাত ১০টা পর্যন্ত বাড়ির উঠানে পড়ে ছিল বৃদ্ধ বাবার মরদেহ।

সন্তানদের এমন কীর্তি দেখে হতবাক হয়েছে গ্রামবাসী। ঘটনাটি ঘটেছে যশোরের অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের কোটা গ্রামের পূর্বপাড়া এলাকায়। মৃত ব্যক্তির নাম হাবিবুর রহমান বিশ্বাস (৭২)। তিনি একজন কৃষক ছিলেন। স্থানীয়রা জানান, মৃত হাবিবুর রহমান বিশ্বাসের চার স্ত্রী ও ৯ সন্তান রয়েছে।

দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি ছোট স্ত্রী ও তার ছোট ছেলে সোহেল বিশ্বাসের সঙ্গে কোটা গ্রামে বসবাস করতেন। মৃত্যুর পূর্বে ছোট স্ত্রীর নামে ৮৩ শতাংশ জমি লিখে দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পর্যায়ে কয়েকবার সালিসের আয়োজন করেছিলেন অন্য স্ত্রী ও সন্তানরা। কিন্তু সিদ্ধানের বিষয়ে অটল ছিলেন তিনি। বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হাবিবুরের মৃত্যুর খবর শুনে সকালে বাড়িতে আসেন ছেলে আতাউর রহমান, সুমন, আনোয়ার ও হাফিজুর।

জমিজমার বিরোধ না মেটে পর্যন্ত বাবার মরদেহ দাফন করতে বাধা সৃষ্টি করেন তারা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, মেম্বার ও এলাকাবাসীকে ডেকে বাড়ির উঠানের এক পাশে সালিস বসানো হয়। এ সময় উঠানে খাটিয়ার ওপর মরদেহ পড়ে ছিল।

মৃতের ছোট ছেলে সোহেল বিশ্বাস বলেন, ‘বাবার কবর পর্যন্ত খুঁড়তে দেয়নি তারা। আমার মায়ের নামে লিখে দেওয়া ৮৩ শতাংশ জমির মধ্য থেকে ৫০ শতাংশ সৎ ভাইয়েদের নামে লিখে দেওয়ার শর্তে মুচলেকা দেওয়ার পর কবর খুঁড়তে ও দাফন করতে দেয় তারা। মৃত্যুর ১৬ ঘণ্টা পর বাবার মরদেহ দাফন করতে হয়েছে। আল্লাহ ওদের বিচার করবেন।’

সালিসে উপস্থিত ইউপি মেম্বার কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘জমিসংক্রান্ত বিরোধ সালিসের মাধ্যমে মীমাংসা করা হয়েছে। রাত ১০টার পর মরদেহের দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।’

চলিশিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সানা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘মরদেহ ফেলে রাখার ঘটনা দুঃখজনক। বিষয়টি জানার পর আমার প্রতিনিধি, মেম্বার ও এলাকাবাসী সালিসের মাধ্যমে তাদের পারিবারিক সমস্যার মীমাংসা করেছেন।’

Link copied!