• ঢাকা
  • বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩০, ১১ রমজান ১৪৪৬

দুই সন্তানকে হত্যা করে বাবার আত্মহত্যা


চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫, ০২:৩০ পিএম
দুই সন্তানকে হত্যা করে বাবার আত্মহত্যা
প্রতীকী ছবি

দুই সন্তানকে হত্যা করে আত্মহত্যা করেছেন বাবা। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার আতিকপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, দেনার বোঝা ও পারিবারিক অশান্তির কারণে দুই সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যা করে আত্মহত্যা করেছেন এক বাবা।

মৃতরা হলো মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইয়ের ছেলে আব্দুর রউফ (৩২) এবং তার দুই কন্যাসন্তান আয়েশা আক্তার (৩) ও খাদিজা আক্তার (৫)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিষ খাওয়ানোর হত্যার পরে নিজেও বিষপান করেন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আয়েশা ও খাদিজার মৃত্যু হয়। আব্দুর রউফও হাসপাতালে পৌঁছার আগেই মারা যান।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আব্দুর রউফ দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সংকটে ভুগছিলেন। তার প্রায় ৭ লাখ টাকার দেনা ছিল, যা পরিশোধে ব্যর্থ হন।

এছাড়া তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিলেন, যার ফলে নিয়মিত আয়-রোজগার করতে পারছিলেন না। সংসারে অভাব-অনটনের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকত।

এদিকে, আব্দুর রউফ তার স্ত্রীকে পরকীয়ার সন্দেহ করতেন, যা তাদের দাম্পত্য জীবনে আরও অশান্তি সৃষ্টি করেছিল। কয়েকদিন আগে তার স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে গেলে তিনি মানসিকভাবে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েন। স্ত্রী ও ঋণের চাপ সামলাতে না পেরে শেষমেশ তিনি সন্তানদের বিষ খাইয়ে হত্যা করেন এবং নিজেও বিষপানে আত্মহত্যা করেন।

স্থানীয়রা জানান, আব্দুর রউফ আগে ভালোভাবেই সংসার চালাতেন। কিন্তু ঋণের বোঝা বাড়তে থাকায় হতাশায় ডুবে যান। নেশাগ্রস্ত হওয়ায় তার কাজকর্মেও গাফিলতি দেখা দেয়। ফলে সংসারে চরম অভাব-অনটন দেখা দেয়, যা তাদের দাম্পত্য জীবনকে আরও বিষাক্ত করে তোলে। এসব কারণেই তিনি চরম সিদ্ধান্ত নেন।

চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে পারিবারিক কলহ ও আর্থিক সংকটকেই মূল কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। তবে আরও বিস্তারিত তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।’

এ ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা বলছেন, সময়মতো মানসিক সহায়তা ও আর্থিক সাহায্য পেলে হয়তো এই মর্মান্তিক ঘটনা এড়ানো যেত।

Link copied!