নীলফামারীতে আগাম আলু উঠতে শুরু করেছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে। তবে কাঙিখত দাম না পাওয়ায় হতাশ এখানকার কৃষকরা। একদিকে নতুন আলুর ফলন ভালো না হওয়া, অন্যদিকে অন্যান্য বছরের চেয়ে দাম কম পাওয়ায় লোকসানের শঙ্কা করছেন তারা।
কৃষকরা জানান, এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে এক মাস দেরিতে আগাম আলু রোপণ করা হয়। বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভালো হয়নি ফলন। এদিকে আগাম আলুর যে দাম পেতে অধীর আগ্রহে ছিলেন সেটিও ভাগ্যে জুটছে না তাদের। স্থানীয় বাজারে আলু বিক্রি করাটাও বড় কঠিন। এই সুযোগটা হাতিয়ে নিচ্ছেন আড়ৎদাররা। তাই জমিতেই কৃষককে নতুন আলু বিক্রি করতে হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে।
আলু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ভারত থেকে নতুন আলু আমদানি করা হচ্ছে। সেই কারণে এ বছর আগাম আলুর দাম পাচ্ছেন না তারা। এছাড়াও দেশে হরতাল-অবরোধে আগাম আলুর দামে ধস নেমেছে। এতে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে চাষিদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, আলুর মাঠে কেউ মাটি খুঁড়ছেন, কেউ আলু কুড়াচ্ছেন, কেউ ঠেসে ঠেসে বস্তা ভরছেন। কেউবা কোদাল দিয়ে আলু গাছের গোরা আলগা করে দিচ্ছেন। আলু তোলার এমন দৃশ্য জেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে।
নীলফামারী সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের দুহুলিপাড়া এলাকার কৃষক নয়ন ইসলাম সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “গত বছরের তুলনায় এবার ফলন কম হয়েছে। এছাড়া দামও কম পাওয়া যাচ্ছে। কিছুদিন পর আরও দাম কমতে শুরু করবে। এতে করে আমরা যারা আগাম আলু চাষ করেছি তাদের লোকসানে পড়তে হবে।”
স্থানীয় আলু ব্যবসায়ী কাদের হোসেন বলেন, “এবার আগাম আলু চাষ করে কৃষকদের লাভ হবে না। কারণ আলু লাগানোর পর বৃষ্টি হওয়ায় অনেকের আলু পচে গেছে। ভারত থেকে নতুন আলু আমদানি করা হচ্ছে। এদিকে হরতাল অবরোধের কারণে আলু পরিবহন করার জন্য গাড়িও পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে নতুন আলুর দাম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কিনতে হচ্ছে।”
নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. এস. এম. আবু বকর সাইফুল ইসলাম সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “চলতি বছর ২১ হাজার ৭১২ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার মধ্যে আগাম আলুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৮০০ হেক্টর। জেলায় এখন পুরাপুরি আগাম আলু তোলা শুরু হয়েছে।”